ভাই (ইনসেটে) শাহবাজ শরিফকে ‘বঞ্চিত’ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ? ছবি: রয়টার্স।
পাক প্রধানমন্ত্রীর গদি শেষ পর্যন্ত কে পাবেন, তা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে দেশের আনাচে কানাচে। প্রধানমন্ত্রীর তখ্তে আসার দৌড়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ এগিয়ে রয়েছেন বলেই ইঙ্গিত মিলেছিল। দলের অন্দরে এখন শোনা যাচ্ছে, শাহবাজকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ‘বঞ্চিত’ করতে চলেছেন খোদ তাঁর দাদাই।
গত শুক্রবার পানামা কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন নওয়াজ শরিফ। যার জেরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে গদিচ্যুত হতে হয়েছে তাঁকে। তার পরে আদালতের রায় নওয়াজকে আজীবন ক্ষমতা থেকে সরিয়ে রাখবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিলই। প্রধানমন্ত্রীর পদে কে বসবেন, তা নিয়েও ছিল জল্পনা। আপাতত অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন প্রাক্তন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসি। রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন চলছিল, নিজের ভাইকেই তখ্তে বসাতে চলেছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু এক সপ্তাহ না কাটতেই বদলে গেল ছবিটা। পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) অন্দরে এখন জোর চর্চা, খুব দক্ষ রাজনৈতিক চালে ভাই শাহবাজকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড় থেকে সরিয়ে দিলেন নওয়াজ। দলের বহু নেতা-কর্মীর বক্তব্য, শাহবাজ পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, তিনি তখ্তে বসলে তাঁর দায়িত্ব সামলাবেন কে। সেই সময় শাহবাজ তাঁর দাদাকে বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন, পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসাবেন তাঁর ছেলে হামজা শরিফকে। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হন শাহবাজ। এমনকী দলের তিনশোরও বেশি এমপি-র মতও নওয়াজের সামনে পেশ করেন তাঁর ভাই। তাতে বলা হয়, ওই এমপি-রা শাহবাজকে কেন্দ্রে এবং পঞ্জাব প্রদেশে হামজাকে দেখতে চাইছেন। তাতেও অবশ্য চিঁড়ে ভেজেনি।
এই ঘটনার পিছনে আবার পারিবারিক রাজনীতির গন্ধও পাচ্ছেন অনেকে। কারণ দলের একটা অংশ বলছে, এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে উঠে আসছে নওয়াজের পরিবারের সদস্যদের নামও। যেমন, শরিফের কন্যা মরিয়ম। ২০১৮ সালের ভোট পর্যন্ত মরিয়মের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ চলবে। তা শেষ না হলে প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য লড়বেন নওয়াজ-পত্নী কালসুম।
শাহবাজ ঘনিষ্ঠদের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘শাহবাজ নিজের দাদাকে আপ্রাণ বোঝানোর চেষ্টা করেও পারেননি।’’ আবার কারও কারও মতে, খুব দক্ষ হাতে রাজনৈতিক চাল খেলেছেন নওয়াজ। এত জল্পনার পরে পাকিস্তানের তখ্তে কে বসবেন, সেটাই এখন দেখার!