আক্ষরিক অর্থেই মিরাকেল। স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি ফের নিজের চোখে এ পৃথিবীর আলো, জল দেখতে পাবেন! কিন্তু হল এমনটাই।
প্রায় দু’দশক আগে একটি দুর্ঘটনায় দৃষ্টিশক্তি হারান ফ্লোরিডার বাসিন্দা ম্যারি আ্যন ফ্রান্সো। চিকিৎসকেরাও জবাব দিয়ে দিয়েছিলেন। তার পর কেটে গিয়েছে একুশ বছর। কিছু দিন আগে নিজের বাড়িতেই পড়ে যান ফ্রাঙ্কো। কাঁধ ও হাত-সহ শরীরের নানা অংশে চোটও পান। এর পরই ডাক্তারদের পরামর্শে মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচারের জন্য রাজি হন তিনি।
গত ৬ এপ্রিল তাঁর মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচার করা হয়। এর পরেই ঘটে সেই মিরাকেল। জ্ঞান ফেরার পর ফ্রাঙ্কো আবিষ্কার করেন ফের চোখে দেখতে পাচ্ছেন তিনি। চিকিৎসকেরাও একই রকম অবাক এই ঘটনায়। স্নায়ুবিশেষজ্ঞ জন আফসার জানাচ্ছেন, ঘটনাটি অভাবনীয় হলেও বিজ্ঞান-সম্মত। ২১ বছর আগের ওই গাড়ি দুর্ঘটনায় চোট পেয়ে ফ্রাঙ্কোর মেরুদণ্ডের একটি ধমনী মুচ়ড়ে গিয়েছিল। আর তাতেই তাঁর মাথার একটা অংশে রক্তসঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে ফ্রাঙ্কো অন্ধ হয়ে যান বলে ধারণা চিকিৎসকদের। সম্প্রতি পড়ে গিয়ে হয়তো সেই একই ধমনীতে চোট পেয়েছিলেন তিনি। অস্ত্রোপচারের সময় অতিরিক্ত পরিমাণে রক্ত তাঁর ওই ধমনী দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। আফসারের মতে, তাতেই কাটে ২১ বছরের বাধা। এমন কী প্রথম দুর্ঘটনার আগে থেকেই বর্ণান্ধ ছিলেন ফ্রাঙ্কো। এই অস্ত্রোপচারের পর তিনি রংও চিনতে পারছেন বলে দাবি চিকিৎসকদের। তবে এ সব বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নিয়ে আদৌ ভাবতে রাজি নন ফ্রাঙ্কো। তাঁর কথায়, ‘‘গাছের ফাঁকে এই যে ঝিলমিলে সূর্যের আলো! আহা, এর থেকে ভাল আর কিছুই হতে পারে না।’’ তবে এর থেকেও বেশি ভাল কিছু দেখার আছে ফ্রাঙ্কোর জীবনে! ২১ বছরের এই অন্ধকার তাঁকে জীবনের অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত করে রেখেছিল। এখন তাই প্রাণপণে জীবনের স্বাদ নিতে চান তিনি।