Perseverance Rover

ওই শোনা যায় মঙ্গলে ওড়ে যান!

কিন্তু পৃথিবীর চেয়ে অনেক হালকা হলেও লালগ্রহে বাতাস আছে। তাতে ভর করেই উড়তে পেরেছে ‘ইনজেনুইটি’।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২১ ০৫:১৮
Share:

ফাইল চিত্র।

মঙ্গলগ্রহে উড়ল হেলিকপ্টার। মঙ্গলের মাটিতে বসেই তার শব্দ রেকর্ড করে ও ভিডিয়ো তুলে পাঠাল নাসার রোভার ‘পার্সিভিয়ার‌্যান্স’। পৃথিবীতে বসে প্রতিবেশী গ্রহে হেলিকপ্টার ‘ইনজেনুইটি’-র ডানা ঘোরার গুরগুর শব্দ শুনল মানুষ! ফড়িংয়ের মতো উড়তে দেখল ছোট্ট হেলিকপ্টারটিকে। কল্পবিজ্ঞানের চলচ্চিত্রে অনেক নাটকীয় কিছুই ঘটতে দেখা যায়। বাস্তবে ‘ইনজেনুইটি’-র শব্দটুকু শুনতে পাওয়াই বিজ্ঞানীদের কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এই প্রথম এমন অভিজ্ঞতা হল পৃথিবীবাসীর।

Advertisement

চাঁদে বাতাস নেই। সেখানে এমনটি সম্ভব নয়। কিন্তু পৃথিবীর চেয়ে অনেক হালকা হলেও লালগ্রহে বাতাস আছে। তাতে ভর করেই উড়তে পেরেছে ‘ইনজেনুইটি’। আর সেই বাতাসে ভেসেই তার ডানার শব্দ পৌঁছেছে ৮০ মিটার দূরের রোভারে, তার ‘সুপারক্যাম’-এ। এই শব্দ ও ছবি ধরা হয়েছে, গত ৩০ এপ্রিল। নাসা শুক্রবার তার ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। তিন মিনিটের ভিডিয়ো। দেখা যাচ্ছে, দূরে পর্দার ডান দিকে ‘ইনজেনুইটি’ খাড়া উঠে গেল বেশ খানিকটা। তার পরে সেই উচ্চতায় থেকেই বাঁ দিকে উড়ে চলে গেল নজরের বাইরে। কিছু পরে বাঁ দিক থেকে আবার উড়ে এসে, ডান দিকের সেই কোনায় খাড়া নেমে এল মাটিতে। এটি ছিল তার চতুর্থ উড়ান। উড়েছে মোট ২৬২ মিটার পথ।

মঙ্গলের বাতাস পথিবীর বাতাসের তুলনায় ১ শতাংশ ঘন। ফলে হালকা, মাত্র ১.৮ কেজির হেলিকপ্টারটিকে ওড়ানোর জন্যও এর ছ’টি ডানাকে পৃথিবীর যে কোনও ড্রোন বা হেলিকপ্টারের চেয়ে অনেক বেশি জোরে ঘোরাতে হয়, মিনিটে প্রায় ২৪০০ পাক। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলকে বোঝার ক্ষেত্রে সেই ডানা ঘোরার শব্দকেই ‘সোনার খনি’ বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

Advertisement

মঙ্গলের বাতাসে ৯৬ শতাংশই কার্বন ডাইঅক্সাইড। যা উচ্চ কম্পাঙ্কের অর্থাৎ তীক্ষ্ণ শব্দ শুষে নেয়। ফলে রেকর্ড হয়েছে কম কম্পাঙ্কের শব্দ। তার উপরে পৃথিবীতে শব্দ যেখানে সেকেন্ডে ৩৪০ মিটার যায়, শীতল আবহাওয়ার কারণে (মাইনাস ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) মঙ্গলে শব্দের গতি মিনিটে ২৪০ মিটার প্রতি সেকেন্ড। ইনজেনুইটির যাওয়া ও ফেরার সময়ের শব্দ মিলে ‘ডপলার এফেক্ট’-ও বেশ স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়েছে। যা থেকে পর্দার বাইরে চলে যাওয়ার পরেও ইনজেনুইটির উড়ানের যাওয়া-আসার বিষয়টি বেশ স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে। এটির প্রথম নির্ধারিত উড়ান পিছিয়ে দিতে হয়েছিল যান্ত্রিক সমস্যার কারণে। গত ১৯ এপ্রিল সেটি প্রথম বার ওড়ে। পঞ্চম বার উড়েছে শুক্রবার। ‘ইনজেনুইটি’-র এই সব উড়ানের অভিজ্ঞতাই এক দিন মঙ্গলে মানুষের বিচরণে সাহায্য করবে। হেঁটে বা রোভারে যাওয়া সম্ভব নয় যেখানে, পৌঁছে যাওয়া যাবে উড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন