International

লোকাল বাসের মতো ফ্লাইটেও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাত্রা! পাকিস্তানের কাণ্ড

আকাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে করাচি থেকে সৌদি আরবের মদিনায় পৌঁছে গেলেন সাত জন! বিশ্বে এই প্রথম! এই অবাক করা ঘটনা ঘটতে দেওয়ার গোটা ‘কৃতিত্ব’টাই পাকিস্তানের সরকারি বিমান সংস্থা ‘পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স’ (পিআইএ)-এর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৬:২৬
Share:

এই সেই ‘বিরল বিমান’!

আকাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে করাচি থেকে সৌদি আরবের মদিনায় পৌঁছে গেলেন সাত জন! বিশ্বে এই প্রথম!

Advertisement

এই অবাক করা ঘটনা ঘটতে দেওয়ার গোটা ‘কৃতিত্ব’টাই পাকিস্তানের সরকারি বিমান সংস্থা ‘পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স’ (পিআইএ)-এর।

এই আমরা যাঁরা কলকাতায় ভরা বাসে সিট না-পাওয়া যাত্রীদের মাথার ওপর হাত তুলে রড আঁকড়ে দাঁড়িয়ে থাকা দেখতে ও দাঁড়িয়ে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি, পাকিস্তানের সরকারি বিমান সংস্থা সেই আমাদেরই জানিয়ে দিল, বিশ্বে আমরা একা নই!

Advertisement

আমরা বাসে দাঁড়িয়ে থাকি। পাকিস্তান দেখিয়ে দিল, এয়ারবাসেও দাঁড়িয়ে থাকা যায়, আকাশে! দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আকাশ-পথেই পাকিস্তানের করাচি থেকে চলে যাওয়া যায় সৌদি আরবের মদিনায়!

২০ ফেব্রুয়ারি এই বিরল ‘কৃতিত্বে’র ভাগিদার হয়েছে পিআইএ-র একটি বোয়িং-৭৭৭। ‘পিকে-৭৪৩’ নামের ওই বিমানটির করাচি থেকে মদিনা যাওয়ার কথা ছিল ৪০৯ জন যাত্রী নিয়ে। কিন্তু সেই ‘বিরল উড়ান’টি মদিনা পৌঁছয় ৪১৬ জন যাত্রী নিয়ে। যাঁদের ৭ জন বিমানের দু’পাশের সিটের দুই সারির (রো) মধ্যে থাকা সরু, লম্বা জায়গাটায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই করাচি থেকে পৌঁছে যান মদিনায়।

গল্প নয়, সত্যি। আর সত্যি বলেই হইহই রইরই শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ, এই ঘটনা আন্তর্জাতিক উড়ানের নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘন করেছে। আর তা হয়েছে পিআইএ’র একটি আন্তর্জাতিক উড়ানেই। শুরু হয়েছে তদন্ত। সাধারণত, বিমানে যত জন যাত্রী সিটে বসে যান, তত জনের জন্যই অক্সিজেন মাস্ক রাখা থাকে বিমানে। তার একটা কমও থাকে না, একটা বেশিও নয়। এটাই আন্তর্জাতিক উড়ান নিরাপত্তা বিধি। তার মানে, ওই দাঁড়িয়ে থাকা ৭ যাত্রীর জন্য সে দিন পিআইএ’র করাচি থেকে মদিনা যাওয়া উড়ানটিতে কোনও অক্সিজেন মাস্কেরও ব্যবস্থা ছিল না।

আরও পড়ুন- অস্ত্র, আরও অস্ত্র, আরও আরও অস্ত্র চান ট্রাম্প!

পাক সংবাদপত্র ‘দ্য ডন’ জানাচ্ছে, যে ৭ যাত্রী আকাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সে দিন করাচি থেকে পৌঁছে গিয়েছিলেন মদিনায়, করাচি বিমানবন্দের তাঁদের প্রত্যেকের হাতেই ধরানো হয়েছিল হাতে লেখা বোর্ডিং পাস। যাত্রীদের যে তালিকা থাকে কম্পিউটারে, সেই তালিকাতেও ওই ৭ দাঁড়ানো যাত্রীর নামধাম ছিল না। ওই বিমানের পাইলট ক্যাপ্টেন আনোয়ার আদিল বলেছেন, ‘‘সবে আকাশে উঠেছি, এমন সময় আমি জানতে পারি, বিমানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন ৭ যাত্রী। বিমান আকাশে ওড়ার আগে দরজা বন্ধ করার পর ওই ৭ যাত্রীর কথা কোনও কেবিন ক্রু-ই আমাকে জানাননি। কিন্তু জানার পর তড়িঘড়ি বিমান নামিয়ে আনিনি। কারণ, সেটা করলে অনর্থক বিমানের জ্বালানি পোড়ানো হত। তাতে এয়ারলাইন্সের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হত।’’

আরও পড়ুন- ভয় পাই না এবিভিপি’কে! কার্গিল শহিদের মেয়ের তোপ ফেসবুকে

পরে অবশ্য পিআইএ’র মুখপাত্র ড্যানিয়েল গিলানি বলেছেন, ‘‘পাইলট যা বলেছেন, সেটা তড়িঘড়ি বিমান না-নামানোর কোনও যুক্তি হতে পারে না। সত্যিটা কী, তা জানার জন্য পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

পিআইএ অবশ্য গত কয়েক বছর ধরেই নানা কারণে খবরের শিরোনাম হয়েছে। গত বছর পিআইএ’র একটি বিমান দুর্ঘটনায় ৪৮ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৩-য় পিআইএ’র একটি আন্তর্জাতিক উড়ান ১৫০ যাত্রীকে নিয়ে করাচি থেকে লন্ডন পৌঁছলে, তার পাইলটকে গ্রেফতার করা হয়, মদ্যপ অবস্থায় বিমান চালানোর অপরাধে। এ ছাড়াও যাত্রী সুরক্ষা বা স্বাচ্ছন্দের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগ তো বেশ কয়েক বছর ধরেই তাড়া করে বেড়াচ্ছে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সকে।

তবে এ বারের ‘রেকর্ড’ পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের অতীতের সব ‘রেকর্ড’কেই ছাপিয়ে গেল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন