রোহিঙ্গাদের উপরে মায়ানমার সেনার অত্যাচারের কথা উঠে এসেছে আগেই। এ বার সামনে এল হিন্দুদের উপরে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের অত্যাচারের ছবি। গত বছরের ২৫ অগস্ট মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে শিশু এবং নারী-সহ অন্তত ৯৯ জন হিন্দুকে হত্যা করেছে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা), মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টে উঠে এসেছে এই তথ্য।
মঙ্গলবার প্রকাশিত অ্যামনেস্টির এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাখাইন এবং বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে হিন্দুদের উপরে রোহিঙ্গাদের অত্যাচার এবং তাঁদের হত্যা করার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে তারা। অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস রেসপন্স ডিরেক্টর তিরানা হাসান বলেন, ‘‘আরসার নৃশংসতার দিকটি উপেক্ষা করা বেশ কঠিন। আরসার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের উপরে সেই অত্যাচারের প্রভাব এখনও রয়েছে।’’
গত বছরের ২৫ অগস্ট কী হয়েছিল? অ্যামনেস্টির রিপোর্ট অনুযায়ী, সে দিন সকালে রাখাইনের মংডুরের আহ নুক খা মং সেইক গ্রামে হিন্দুদের উপরে হামলা চালায় আরসার সদস্যরা। তাদের সঙ্গে হাত মেলায় স্থানীয় রোহিঙ্গা গ্রামবাসীরা। সকলে মিলে হিন্দুদের বাড়ি-ঘর লুট করে। তার পরে ৫৩ জন হিন্দুর চোখ বেঁধে গ্রামের বাইরে নিয়ে গিয়ে খুন করে আরসা। ওই দিনই পাশের গ্রাম ইয়ে বাউক কিয়ার থেকে নারী ও শিশু-সহ ৪৬ জন হিন্দুকে অপহরণ করে আরসা। তাঁদের হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে আহ নুক খা মং সেইক গ্রামে উদ্ধার হওয়া একটি গণকবর থেকে ৪৫ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে।
তবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হওয়ায় আট মহিলা এবং তাঁদের আট শিশু সন্তানকে মুক্তি দেয় আরসা। তাঁদেরই এক জন বছর বাইশের বীণা বালা। অ্যামনেস্টিকে তিনি বলেছেন, ‘‘আরসা সদস্যদের হাতে ছুরি এবং বড় বড় রড ছিল। আমাদের চোখ এবং হাত-পা বেঁধে রাখা হত। করা হত মারধরও।’’ আরসার অত্যাচারে ইতিমধ্যেই প্রায় ৪৫০ জন হিন্দু বাংলাদেশে পালিয়েছেন। আলাদা শিবির করে তাঁদের রাখা হয়েছে।
গত বছরের ২৬ অগস্ট মংডুর কাছে একটি গ্রামে খুন হন ন’জন হিন্দু। তার পরেই আরসার হাতে হিন্দু খুনের বিষয়টি সামনে আসে।