হাসিনার ছেলেকে অপহরণের চক্রান্ত, ধৃত সম্পাদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্রকে আমেরিকার মাটিতে অপহরণের অন্যতম চক্রান্তকারী সন্দেহে বাংলাদেশের এক প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে শনিবার গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা শফিক রেহমান (৮১) বিএনপি-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ওই দলের নেত্রী খালেদা জিয়ার বক্তৃতার খসড়া লেখার দায়িত্বে ছিলেন শফিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৫৫
Share:

শফিক রেহমান। ছবি: এএফপি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্রকে আমেরিকার মাটিতে অপহরণের অন্যতম চক্রান্তকারী সন্দেহে বাংলাদেশের এক প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে শনিবার গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

Advertisement

বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা শফিক রেহমান (৮১) বিএনপি-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ওই দলের নেত্রী খালেদা জিয়ার বক্তৃতার খসড়া লেখার দায়িত্বে ছিলেন শফিক। কয়েক দিন আগে তাঁকে দলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আহ্বায়ক মনোনীত করেছেন খালেদা। আশির দশকে সেনাশাসক হুসেইন মহম্মদ এরশাদের রোষানলে পড়ে দীর্ঘদিন দেশছাড়া হতে হয়েছিল শফিক রেহমানকে। সেই সময়ে বিবিসি-তে কাজ করা এই সাংবাদিকের ব্রিটিশ নাগরিকত্বও রয়েছে। এ দিন সকালে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল শফিক রেহমানের বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে আদালতে পেশের পরে বিচারক তাঁকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র তথা তাঁর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণের একটি ছক সম্প্রতি সামনে এসেছে। আমেরিকার এক বিএনপি নেতার ছেলে রিজভি আহমেদ সিজারকে গ্রেফতার করে মার্কিন পুলিশ। বিচারে তাঁর কারাদণ্ডও হয়। সিজারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, জয়ের গতিবিধি জানার জন্য তিনি এফবিআই-এর এক সদস্যকে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এফবিআই সেই চক্রান্তের বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশকে জানানোর পরে গত বছর অগস্টে পল্টন থানায় একটি মামলা করে গোপনে তদন্ত শুরু করে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ। এ দিন আদালতে তারা জানায়, শফিক রেহমানকে সেই মামলার অন্যতম প্রধান চক্রান্তকারী হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

শফিকের গ্রেফতারকে হাসিনা সরকারের ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে দাবি করেছে বিএনপি। বিএনপি ও জামাতে ইসলামি জোটের নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘‘এটা সরকারের চরম স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ। প্রধানমন্ত্রীর জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার কারণেই প্রবীণ এই সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ আদালতে বিএনপি-র আইনজীবীরা দাবি করেন, এফবিআই-এর অভিযোগে কোথাও এই সাংবাদিকের নাম নেই। বাংলাদেশ পুলিশের করা মামলাটিতেও শফিক রেহমানের নাম করা হয়নি। অভিযোগ, সাজানো মামলায় বিএনপি নেতাদের জেলে ভরছে সরকার। সরকারের বিরুদ্ধে সব সময়ে সরব শফিক রেহমান সেই তালিকায় নতুন নাম।

এর আগে পুলিশকে আক্রমণে জনতাকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে বিএনপি-ঘনিষ্ঠ কাগজের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছিল শেখ হাসিনার সরকার। আর একটি ইংরেজি সংবাদপত্রের সম্পাদক মাহফুজ আনমের বিরুদ্ধে কয়েকশো মামলা করেছে শাসক দল আওয়ামি লিগের সমর্থকরা। এই ঘটনায় বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। শফিক রেহমানের গ্রেফতার সেই অভিযোগকে জোরাল করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement