বিমান ছিনতাই ঘিরে নাটক মাল্টায়

বিমানে মাত্র সওয়া এক ঘণ্টার পথ। লিবিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর সাভা থেকে রাজধানী ত্রিপোলি। শুক্রবার সকালে গন্তব্যে অবশ্য পৌঁছনো হয়নি আফ্রিকিয়া এয়ারওয়েজ-এর ৮ইউ২০৯ উড়ানের। তার আগেই মাঝ আকাশে দুই ছিনতাইকারীর হুমকির জেরে সে বিমানকে ত্রিপোলি পেরিয়ে নামতে হয় মাল্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ভ্যালেট্টা (মাল্টা) শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৩
Share:

বিমানে মাত্র সওয়া এক ঘণ্টার পথ। লিবিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর সাভা থেকে রাজধানী ত্রিপোলি। শুক্রবার সকালে গন্তব্যে অবশ্য পৌঁছনো হয়নি আফ্রিকিয়া এয়ারওয়েজ-এর ৮ইউ২০৯ উড়ানের। তার আগেই মাঝ আকাশে দুই ছিনতাইকারীর হুমকির জেরে সে বিমানকে ত্রিপোলি পেরিয়ে নামতে হয় মাল্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। লিবিয়া উপকূল থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে দ্বীপরাষ্ট্র মাল্টা। সেখানে নামার পরে যাত্রীদের মুক্তি ও ছিনতাইকারীদের আত্মসমর্পণ— টানা চার ঘণ্টা লম্বা নাটকের সাক্ষী হতে হয় আরোহীদের।

Advertisement

কিন্তু তার পরেও কেন ছিনতাই, সেটা স্পষ্ট হয়নি। মাল্টা প্রশাসনের বক্তব্য, গ্রেনেডে বিমান ওড়ানোর হুমকি দিয়ে তাঁদের দেশে বিমানটিকে নামতে বাধ্য করে ছিনতাইকারীরা। পরে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়। বিমানে ছিলেন ১১১ জন যাত্রী। মাল্টা সেনাবাহিনীর তৎপরতায় একে একে সব যাত্রীকে বার করেও আনা হয়। ‘টেলিভিশন মাল্টা’র ফুটেজে দেখা যায়, বিমানের দরজা খুলে দিয়েছে ছিনতাইকারীরা। একে একে বেরিয়ে আসছেন ২৮ জন মহিলা। সঙ্গে ছিল একটি শিশুও। তার পরে বেরিয়ে আসেন ৮২ জন পুরুষ যাত্রী। কিছু ক্ষণ পরে সাত বিমানকর্মীও মুক্তি পান। বেলা গড়িয়ে তখন প্রায় বিকেল।

পরে মাল্টার বিদেশ মন্ত্রক জানায়, ছিনতাইকারীরা গ্রেনেড দিয়ে বিমান ওড়ানোর হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু এই ছিনতাই কীসের জন্য, তা বোঝা যাচ্ছে না। মাল্টায় বিমান ছিনতাই ঘিরে আতঙ্ক ছড়ানোয় বেশ কয়েকটি বিমান ঘুরপথে ইতালির কাতানিয়া-ফন্তানারোসা বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

কী কারণে বিমান ছিনতাই, তা প্রাথমিক ভাবে স্পষ্ট না হলেও কূটনীতিকরা জানাচ্ছেন মরুশহর সাভা বহু দিন ধরেই উপজাতি সংঘর্ষে দীর্ণ। লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রয়াত শাসক মুয়াম্মর গদ্দাফির অনুগত গোষ্ঠী এবং গদ্দাফি-বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে এখনও মাঝেমধ্যেই সংঘর্ষ বাধে। বস্তুত গদ্দাফি পতনের পর থেকে লিবিয়ায় সে ভাবে স্থিতিশীল সরকার গড়েই ওঠেনি। আর তাই আইএস এবং আল কায়দার মতো জঙ্গি গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়েছে ক্রমশ। মাল্টা সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবারের ছিনতাইয়ে হাত ছিল গদ্দাফি অনুগত গোষ্ঠীরই। বিমান থেকে সবুজ পতাকা নাড়িয়ে তারা তেমন প্রমাণই দিয়েছে। তবে তাদের কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী মদত দিয়েছে কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়। ছিনতাইকারীরা জানায়, দাবি মানলে সবাইকে মুক্তি দেবে। কিন্তু দাবিটা কী আর সেটা মানা হয়েছে কি না, তা নিয়ে শেষ পর্যন্ত ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। লিবিয়ার পরিবহণমন্ত্রী ছিনতাইকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে জানানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন