পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে চিনের। —প্রতীকী ছবি / রয়টার্স।
পাকিস্তানে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূতের উপর হামলা আশঙ্কা রয়েছে। পাক সরকারকে এমনই জানাল চিন। রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা অবিলম্বে বাড়ানোর দাবিও জানানো হল চিনের তরফে। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট (ইটিআইএম) পাকিস্তানে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূতকে খুন করার ছক কষেছে এবং তাঁকে খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে এক জঙ্গি ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে ঢুকেছে। চিনের তরফে এমনই জানানো হয়েছে পাক প্রশাসনকে।
সম্প্রতি পাকিস্তানে রাষ্ট্রদূত বদল করেছে চিন। এত দিন যিনি আফগানিস্তানে চিনা দূত হিসেবে কাজ করছিলেন, সেই ইয়াও চিং-কে এ বার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চিনা দূতাবাস সামলানোর দায়িত্ব দিয়ে ইসলামাবাদে পাঠানো হয়েছে। আর গত তিন বছর যিনি ইসলামাবাদে ছিলেন, সেই সান ওয়েইডং-কে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে বেজিং। কিন্তু ইয়াও চিং-এর নতুন ইনিংসের শুরুটা মোটেই সুখকর হচ্ছে না। চিনা গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন, ইটিআইএম জঙ্গিরা চিং-কে খুনের চক্রান্ত করেছে। পাকিস্তানে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূতকে খুন করার দায়িত্ব যে জঙ্গি পেয়েছে, সে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে ঢুকেও পড়েছে বলে চিনের দাবি।
আরও পড়ুন: মসুল, রাকার গণকবরে কি ভারতীয়রা? ডিএনএ পাঠালেন সুষমা
আরও পড়ুন: দলাই লামার সঙ্গে সাক্ষাত্ ‘চরম অপরাধ’, হুঁশিয়ারি চিনের
৫ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বিনিয়োগে তৈরি চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের (সিপিইসি) নিরাপত্তা নিয়ে এমনিতেই চিন্তায় বেজিং। পাকিস্তানের হাত থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার দাবিতে লড়তে থাকা বালোচরা তো বটেই, আরও বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের নিশানায় রয়েছে চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডর। পাকিস্তানের সেনা এবং পুলিশ করিডরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে অত্যন্ত তৎপর। কিন্তু পাক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর সম্পূর্ণ ভরসা করে না বেজিং, তাই চিনা গোয়েন্দারাও সব সময় সক্রিয় থাকেন পাকিস্তানে। গোয়েন্দা সূত্রেই সিপিইসি কর্তৃপক্ষ এ বার জানতে পেরেছেন, শুধু করিডরের উপর নয়, চিনা রাষ্ট্রদূতের উপর হামলার ছকও কষছে জঙ্গিরা। তাই সিপিইসি প্রকল্পের অন্যতম শীর্ষকর্তা পিং য়িং ফি ১৯ অক্টোবর চিঠি পাঠিয়েছেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকে। ইসলামাবাদে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা অবিলম্বে আরও বাড়াতে বলেছেন তিনি। আবদুল ওয়ালি নামে এক জঙ্গিকে এটিআইএম পাকিস্তানে ঢুকিয়েছে বলে সিপিইসি-র চিনা কর্তা চিঠিতে লিখেছেন। ওই ব্যক্তির পাসপোর্টের বিশদ বিবরণও তিনি নিজের চিঠিতে তুলে ধরেছেন। পাকিস্তান অবিলম্বে ওই জঙ্গিকে গ্রেফতার করুক এবং চিনা দূতাবাসের হাতে তুলে দিক। এমনই দাবি জানানো হয়েছে চিনের তরফে। তবে বিষয়টি নিয়ে চিনা দূতাবাস বা পাক প্রশাসন কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।