রেলগাড়ির কামরায়: ইয়ামানাশি থেকে টোকিয়োর পথে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে তাঁর আলিঙ্গনের ছবি ‘ভাইরাল’ হয়েছে বহু বার। কূটনীতিতে ব্যক্তিগত রসায়নকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রজাতন্ত্র দিবসের আমন্ত্রণ রক্ষা না করলেও জাপান সফরে মোদীর সেই ব্যক্তিগত কূটনীতির চিত্র বদলাল না। আজ জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে ব্যক্তিগত রসায়ন তৈরির সব চেষ্টা চালিয়ে গেলেন তিনি। মজবুত সম্পর্কের কথা ফের তুলে ধরতে আবেকে ঢালাও উপহারও দিলেন। আবেও জানালেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ‘সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য’ বন্ধুদের মধ্যে অন্যতম।
জাপান-ভারত শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে গত কাল রাতে জাপান পৌঁছন মোদী। আজ ফুজি পর্বতের কাছে মনোরম ইয়ামানাশি এলাকায় মোদীকে স্বাগত জানান আবে। মোদী টুইটারে জানিয়ে দেন, ‘‘ইয়ামানাশিতে আবের সঙ্গে দেখা করে আমি খুব খুশি।’’ আট ঘণ্টা একসঙ্গে সময় কাটান দুই প্রধানমন্ত্রী। আবেকে গুজরাতের কারুশিল্পী সাবিরহুসেন ইব্রাহিমভাই শেখের তৈরি রাজস্থানের গোলাপি ও হলুদ কোয়ার্ৎজ পাথরের তৈরি পাত্র উপহার দিয়েছেন মোদী। সেইসঙ্গে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর এলাকার তাঁতিদের তৈরি কার্পেট ও জোধপুরে তৈরি কাঠের সিন্দুক। পরে ইয়ামানাশিতে রোবট প্রস্তুতকারক সংস্থা ফ্যানইউসি কর্পোরেশনের কারখানাতে যান দুই রাষ্ট্রনেতা। পরে এক্সপ্রেস ট্রেনে টোকিয়ো যাত্রা করেন তাঁরা। পরে আবে জানান, মোদী তাঁর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বন্ধুদের মধ্যে অন্যতম।
বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, প্রতিটি পদক্ষেপেরই তাৎপর্য রয়েছে। রেল আধুনিকীকরণ, রোবোটিকস-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাপানি সহযোগিতা ভারতের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ। বুলেট ট্রেন-সহ নানা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে জাপানি সংস্থা। লোকসভা ভোটের আগে ফের কিছু প্রকল্পে জাপানি সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি আদায় করতে পারলেও তা নরেন্দ্র মোদী সরকারের পক্ষে সুবিধেজনক।
আগামিকাল আনুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠকে বসবেন দুই রাষ্ট্রনেতা। সেখানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের প্রভাব রুখতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপদ বাণিজ্য পথ তৈরিকে দু’দেশই অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর। টোকিয়োতে প্রবাসী ভারতীয়দের সম্মেলনেও বক্তৃতা দেওয়ার কথা মোদীর।