মহম্মদ মুইজ়্জ়ু-নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
মলদ্বীপের রাজধানী মালেতে গিয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ়্জ়ুর সঙ্গে বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দুই রাষ্ট্রনেতার শুক্রবারের বৈঠকের আলোচনার অন্যতম বিষয় ভারতের তরফে মলদ্বীপকে সাড়ে ৫৬ কোটি ডলার (প্রায় ৪৯০০ কোটি টাকা) ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব।
এ ছাড়া মোদী-মুইজ্জু বৈঠকে ভারত-মলদ্বীপ ‘মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি’ এবং সমুদ্র গবেষণা নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা। শুক্রবার মলদ্বীপের রাজধানী মালের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে মোদীর বিমান। তাঁকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ়্জ়ু। এর পরে মলদ্বীপের ৬০তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে যোগ দিতে যান প্রধানমন্ত্রী। ২১টি তোপধ্বনির মাধ্যমে সম্মানিত করা হয় মোদীকে। প্রসঙ্গত, ১৯৬৫ সালের ২৬ জুলাই আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীনতা লাভ করেছিল একদা ব্রিটিশ শাসনাধীন মলদ্বীপ।
দু’বছর আগে মুইজ়্জ়ু যখন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসেছিলেন, ভারতের সঙ্গে ওই দ্বীপরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। উল্টো দিকে চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে মুইজ়্জ়ুর। গদিতে বসার পরপরই তিনি চিন সফরেও গিয়েছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর লক্ষদ্বীপ সফরকে কেন্দ্র করে মলদ্বীপের কয়েক জন মন্ত্রীর মন্তব্যে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। মুইজ়্জ়ু মলদ্বীপ থেকে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে বলার পরে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েন নতুন মাত্রা পায়, ভারতীয় পর্যটকদের প্রিয় মলদ্বীপকে বয়কটের ডাকও উঠেছিল এ দেশে। সেই দেশের পর্যটনে যা গুরুতর প্রভাব ফেলে।
কিন্তু গত দু’বছরে মলদ্বীপের আর্থিক পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হয়েছে। বেজিঙের য়ের তরফে প্রত্যাশিত সহায়তা না পাওয়ারও অভিযোগ উঠেছে ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রের অন্দরে। প্রশ্ন উঠেছে, ‘ইন্ডিয়া আউট’ নীতির কার্যকারিতা নিয়ে। এমনকি, আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ) সতর্কবাণী শুনিয়েছে যে, বেজিংয়ের ঋণের জালে জড়িয়ে পড়তে পারে মালে। এই আবহে মুইজ়্জ়ুর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে মোদীর দু’দিনের মলদ্বীপ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের পরে আবার মলদ্বীপ সফরে গেলেন মোদী। শনিবার মালে থেকে নয়াদিল্লি ফেরার কথা তাঁর।