Narendra Modi

দিল্লির সন্ত্রাস-বিরোধী তোপ চিনকে সঙ্গে নিয়ে

কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ব্রিকসের মঞ্চ থেকে সন্ত্রাস নিয়ে এমন বার্তা দিয়ে মোদী এক দিকে পাকিস্তানকে সতর্ক করলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০ ০৪:১৯
Share:

ব্রিকস বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।  ছবি: পিটিআই।

চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে (ভিডিয়ো মাধ্যমে) বহুপাক্ষিক মঞ্চের (ব্রিকস) বৈঠকে বসে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সন্ত্রাসবাদকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে তুলে ধরে তাঁর বক্তব্য, যে সব দেশ এই জঙ্গিপনাকে সমর্থন করছে, তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক। এর পরেই আজ গভীর রাতে একটি সন্ত্রাস-বিরোধী অঙ্গীকারপত্র প্রকাশ করা হয় ব্রিকসের পক্ষ থেকে। চিন, রাশিয়া এবং ভারত (ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে) সন্ত্রাস-বিরোধিতার এই নথিতে নীতি হিসেবে বলেছে, অংশগ্রহণকারী সব দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি পূর্ণ মর্যাদা ও একে অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না-গলানোর কথা। পাশাপাশি বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদকে মেনে আন্তর্জাতিক আইনের বিধির প্রতি প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে হবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ রুখতে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলির সমন্বয় বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। চলতি পরিস্থিতিতে চিন শামিল রয়েছে এমন মঞ্চ থেকে এই ধরনের বিবৃতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত কূটনীতিকদের। কারণ, এতে সন্ত্রাস নিয়ে ভারতের সব উদ্বেগের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ব্রিকসের মঞ্চ থেকে সন্ত্রাস নিয়ে এমন বার্তা দিয়ে মোদী এক দিকে পাকিস্তানকে সতর্ক করলেন। অন্য দিকে চিন-পাকিস্তানের অক্ষকেও সামনে নিয়ে আসতে চাইলেন। শুধু বাণিজ্যিক বা আর্থিক করিডর সংযোগই নয়, পাকিস্তানের ভারত-বিরোধী কার্যকলাপের বড় খুঁটি বেজিং— এমনটাই মনে করে দিল্লি।

তবে সন্ত্রাসবাদের মোড়কে চিন-পাকিস্তান অক্ষ সংক্রান্ত বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি মোদী নাম না করে আঙুল তুলেছেন গলওয়ান-কাণ্ড এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে চিনের ভূমিকার দিকেও। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত বিশ্বাস করে, সমস্ত রাষ্ট্রের মধ্যে সংযোগ বাড়াতে হলে একে অন্যের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: অতিমারি রোখার জন্য প্রতিষেধকই যথেষ্ট নয়, সতর্কবার্তা হু প্রধানের

এমন একটা সময়ে ব্রিকসের এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক প্রশ্নে এবং ভারতের কাছে আদৌ স্বাভাবিক নয়। অতিমারির প্রকোপ বারবার ফিরে আসছে গোটা বিশ্বে। আর্থিক ধাক্কার পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের অতীতের মডেল। ভিতরের এই বিপদ সামলানোর পাশাপাশি অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে ভারতের সীমান্ত। চিন এবং পাকিস্তান সংঘর্ষের দু’টি দরজাই আপাতত হাট করে খোলা।

এই মাসেই এসসিও বৈঠকে ভারত ও চিন মুখোমুখি হয়েছিল। সেখানেও সার্বভৌমত্ব সংক্রান্ত বার্তা দিয়েছিলেন মোদী। ভারত-চিনের মধ্যে লাদাখের উত্তাপ কমানোর জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে সক্রিয় রাশিয়াও ছিল আজকের বৈঠকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এবং শি-কে সামনে রেখে মোদীর মন্তব্য, “সন্ত্রাসবাদ আজ বিশ্বে সবচেয়ে বড় সমস্যা। যে সব দেশ সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন ও সাহায্য করে তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে সুসংহত ভাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন