পোপ ফ্রান্সিস।- ফাইল চিত্র।
খোদ পোপ ফ্রান্সিস ‘নরকের অস্তিত্ব নেই’ বলে মন্তব্য করায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে ভ্যাটিকান।
এতটাই যে, রীতিমতো লিখিত বিবৃতি দিয়ে ভ্যাটিকানের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘পোপের মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে।’’
পোপ ফ্রান্সিসের একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন ইতালির একটি প্রথম সারির দৈনিক ‘লা রিপাবলিকা’-র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ইউজেনিও স্ক্যালফেরি। সেই সাক্ষাৎকারটি ছাপা হয় গত বুধবার। তাতে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধে ইতালির প্রবীণ সাংবাদিক স্ক্যালফেরি পোপকে উদ্ধৃত করেন।
ওই প্রবন্ধে স্ক্যালফেরি লিখেছেন, তিনি যখন প্রশ্ন করেন, ‘‘দুষ্ট আত্মারা যায় কোথায়?’’, তখন পোপ ফ্রান্সিস তাঁকে বলেন, ‘‘তাদের কোনও শাস্তি হয় না। যাঁরা নিজেদের ভুলভ্রান্তির জন্য অনুতপ্ত হন, ঈশ্বর তাঁদের ক্ষমা করেন। মৃত্যুর পর তাঁদের জায়গা হয় সেখানেই, যেখানে ঠাঁই পায় সেই সব আত্মা, যারা বরাবর ঈশ্বরকে মেনে চলেছে। আর যাঁরা অনুতপ্ত হন না, ঈশ্বর তাঁদের ক্ষমাও করেন না। তারা হারিয়ে যায়। নরকের কোনও অস্তিত্ব নেই। কিন্তু পাপী আত্মারা যে উধাও হয়ে যায়, সেটা বাস্তব।’’
আরও পড়ুন- সাড়ে ৫ বছর পর সেই সোয়াটেই ফিরলেন মালালা
আরও পড়ুন- পাকিস্তানেই থাকতে চান মালালা
সাংবাদিক স্ক্যালফেরি কোনও রাখঢাক না রেখেই বলেছেন, ওই সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় তিনি নোটবুক, পেন নিয়ে নোট নেননি। তা রেকর্ডও করে রাখেননি। তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন না। পোপ ফ্রান্সিস নাস্তিকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন বলেই তাঁকে সময় দিয়েছিলেন।
তবে পোপ ফ্রান্সিসের মন্তব্য বিকৃত করার অভিযোগ এর আগেও তুলেছিল ভ্যাটিকান। ২০১৪ সালে। সেই সময় পোপ ফ্রান্সিস স্ক্যালপেরিকে বলেছিলেন, ‘‘পাপের অবলুপ্তি ঘটিয়েছি আমি।’’
নরক নিয়ে অবশ্য এর আগেও পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করেছেন ভ্যাটিকানের পূর্বতন দুই পোপ। পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট ও পোপ দ্বিতীয় জন পল।
২০০৭ সালে পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট বলেছিলেন, ‘‘সত্যি সত্যিই নরক রয়েছে।’’ যদিও ১৯৯৯ সালে পোপ দ্বিতীয় জন পল মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘নরক কোনও আলাদা জায়গা নয়। পাপের পরিণতিই নরক।’’
এর আগে বিতর্কিত মন্তব্য করার আরও কয়েকটি নজির আছে পোপ ফ্রান্সিসের।
২০১৩ সালে বলেছিলেন, ‘‘যদি কোনও সমকামী ঈশ্বরকে চান, পেতেই পারেন। আমি বাধা দেওয়ার কে?’’
২০১৫ সালে ক্যাথলিক চার্চ নিয়ে পোপ ফ্রান্সিসের মন্তব্য ছিল, ‘‘আমার তো ক্যাথলিক চার্চগুলিকে অনেক সময়েই হাসপাতাল বলে মনে হয়। যত ক্ষতবিক্ষত মানুষের ভিড় সেখানে।’’