মুসলিম উদ্বাস্তুদের পা ধুয়ে দিয়ে শান্তি-বার্তা পোপের

ওঁরা সবাই শরণার্থী। কেউ ক্যাথলিক খ্রিস্টান, কেউ মুসলিম, কেউ বা হিন্দু। কিন্তু সবার আগে ওঁরা মানুষ। ইস্টারের আগে ‘হোলি থার্সডে’-র অনুষ্ঠানে সেই মৈত্রীর বার্তাকে সঙ্গে নিয়েই ১২ জন শরণার্থীর পা ধুইয়ে দিলেন পোপ ফ্রান্সিস।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রোম শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৬ ০৩:২৮
Share:

শরণার্থীদের পা ধুইয়ে দিচ্ছেন পোপ ফ্রান্সিস। রোমের এক উদ্বাস্তু শিবিরে। ছবি: এএফপি।

ওঁরা সবাই শরণার্থী। কেউ ক্যাথলিক খ্রিস্টান, কেউ মুসলিম, কেউ বা হিন্দু। কিন্তু সবার আগে ওঁরা মানুষ। ইস্টারের আগে ‘হোলি থার্সডে’-র অনুষ্ঠানে সেই মৈত্রীর বার্তাকে সঙ্গে নিয়েই ১২ জন শরণার্থীর পা ধুইয়ে দিলেন পোপ ফ্রান্সিস। চুম্বন করলেন সেই পা। শরণার্থী সমস্যার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলিকে মনে করিয়ে দিলেন তাদের দায়িত্ব। সেই সঙ্গে কড়া নিন্দা করলেন ব্রাসেলস হামলার।

Advertisement

যিশুর পুনর্জন্মকে উদযাপন করা হয় ইস্টারে। তবে শুধু ‘ইস্টারের রবিবার’ নয়, গোটা সপ্তাহ ধরেই পালিত হয় নানা পবিত্র অনুষ্ঠান। সপ্তাহের পঞ্চম দিন, অর্থাৎ গুড ফ্রাইডের ঠিক আগের বৃহস্পতিবারটিই পালিত হয় ‘হোলি থার্সডে’ হিসেবে। পরম্পরা অনুযায়ী এ দিন খ্রিস্টানদের মধ্যে থেকে ১২ জনকে ঈশ্বরের

দূত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

নিজের হাতে পোপ তাঁদের পা ধুইয়ে দেন। আশীর্বাদ করেন।

তবে এ বছর পোপ ফ্রান্সিসের হাত ধরে অনেকটাই বদলালো নিয়মকানুন। এত দিন পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারতেন কেবল পুরুষরাই। মহিলাদের কোনও ভূমিকা সেখানে থাকত না। কিন্তু এ বার ওই ১২ জনের মধ্যে ছিলেন ৪ জন মহিলা। আগে কেবলমাত্র দীক্ষিত খ্রিস্টানরাই এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারতেন। ২০১৬-য় সেই নিয়মও গেল পাল্টে। এই বছর বিভিন্ন ধর্ম থেকে বেছে নেওয়া হল ১২ জন শরণার্থীকে। ভ্যাটিকান সূত্রের খবর, এ বারের ১২ জনের মধ্যে রয়েছেন এক মহিলা-সহ পাঁচ ক্যাথলিক, তিন মিশরীয় খ্রিস্টান মহিলা, মালি, সিরিয়া ও পাকিস্তানের তিন মুসলিম এবং এক ভারতীয় হিন্দুও। রোমের এক শরণার্থী শিবিরে এ দিনের অনুষ্ঠানটি হয়।

এ দিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সরাসরি বার্তা পোপের— ‘‘আমাদের ধর্মটা আলাদা হতে পারে, তবে আমরা ভাই, একই ঈশ্বরের সন্তান, আর কিছু নয়, আমরা শুধু শান্তিতে তাকতে চাই।’’ এ দিন যখন পোপ ফ্রান্সিস ওই ১২ জন শরণার্থীর সামনে নতজানু হয়ে বসে পা ধুইয়ে দিচ্ছিলেন তখন তাঁদের সবার চোখেই প্রায় জল। বাসভূমি ছেড়ে আসা ওই উদ্বাস্তু মানুষগুলো, যারা দীর্ঘদিন ধরে লড়ে চলেছেন শুধুমাত্র মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুর জন্য। তাঁরা প্রত্যেকেই এ দিন পোপের আন্তরিকতায় আপ্লুত। বিভিন্ন ভাষায় স্বাগত লেখা একটি ব্যানার দিয়ে শরণার্থীদের এ দিন অভিনন্দন জানান পোপ। অনুষ্ঠানের শেষে সমস্ত শরণার্থীর কাছে পৌঁছে যান পোপ, চলে নিজস্বী তোলার পর্বও।

আগেও শরণার্থী সমস্যা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন পোপ। এ দিনও শরণার্থী সমস্যা নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর চুড়ান্ত অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। পাশাপাশি মুসলিম বিরোধীতার এই আবহে ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি’— সেই বার্তাকেই এ দিন আরও একবার মনে করিয়ে দিতে চাইলেন পোপ ফ্রান্সিস

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন