Prince Harry

‘বিয়েতে বাধা দেয়নি কেট-উইলিয়াম’

রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের মৃত্যুর দিনও তিনি রাজপরিবারের ব্যবহারে আহত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন হ্যারি। তাঁর স্ত্রী মেগান বালমোরাল প্রাসাদে ‘অনাহুত’ ছিলেন। সে কথাও জানিয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৮
Share:

ব্রিটেনের রাজকুমার হ্যারি। ফাইল ছবি।

চুপ করে থাকলে নিগ্রহকারীকে নিগ্রহ করতে দেওয়া হয়। আগামিকাল ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত হচ্ছে ব্রিটেনের রাজকুমার হ্যারির লেখা আত্মজীবনী ‘স্পেয়ার’। তার আগে একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক রাজপুত্র এ কথাই বললেন।

Advertisement

বইয়ের কিছু কিছু অংশ পড়ে শোনান হ্যারি। তিনি লিখেছেন, কী ভাবে সৎমা ক্যামিলার স্বার্থসিদ্ধির জন্য তাঁর ভালমন্দ উৎসর্গ করতে হয়েছিল। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক টম ব্র্যাডবি হ্যারিকে সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন করেন, আপনি কি ক্যামিলার প্রতি গোড়া থেকেই খুব নিষ্ঠুর নন? জবাবে হ্যারি বলেন, ‘‘নিষ্ঠুর? আমি এমন কোনও কিছু বলিনি, যা থেকে মনে হতে পারে পরিবারের কারও প্রতি আমি নিষ্ঠুর, বিশেষ করে সৎমা তো নয়ই। এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে অতীতে, কিছু সম্প্রতি ঘটেছে, যা বেদনাদায়ক।’’

রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের মৃত্যুর দিনও তিনি রাজপরিবারের ব্যবহারে আহত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন হ্যারি। তাঁর স্ত্রী মেগান বালমোরাল প্রাসাদে ‘অনাহুত’ ছিলেন। সে কথাও জানিয়েছেন। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়।ঠাকুমার মৃত্যুর বেশ পরে প্রাসাদে পৌঁছন হ্যারি। দাদা উইলিয়ামের বিমানে তাঁর জায়গা হয়নি। তিনি নিজের মতো গিয়েছিলেন, বেরিয়েও আসেন সকলের আগে। মেগান সেখানে যাননি। এ নিয়ে কথা উঠেছিল তখনই।

Advertisement

রাজপরিবার প্রসঙ্গে হ্যারি বলেন, ‘‘আমি বাবাকে ভালবাসি, দাদাকে ভালবাসি, আমার পরিবারকে ভালবাসি।’’ তিনি জানিয়েছেন, পরিবারের কাউকে আঘাত করার মতো কোনও অভিপ্রায় তাঁর নেই। তবে এ-ও সত্য, ‘‘নিজেদের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে গিয়ে কিছু মানুষ দৈত্যের সঙ্গেও সহবাস করতে রাজি হয়েছে।’’ থামেননি হ্যারি। যোগ করেছেন, ‘‘সেটা তাঁদের পছন্দ ছিল। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে যখন অন্যদের ক্ষতি হচ্ছে, আমার ক্ষতি হচ্ছে, আমি সেখানে লাইন টেনে দিয়েছি।’’

হ্যারি জানিয়েছেন, রাজপরিবারের সকলে লাইমলাইটে থাকার জন্য লড়ে চলেছে। বাবা, সৎমা কিংবা অফিসের থেকে নানা ভাবে কষ্ট পেয়েছে উইলিয়াম-কেট-ও। বইয়ের নাম ‘স্পেয়ার’ শব্দটি টেনে এনে হ্যারি জানিয়েছেন, তাঁরা এখন বাড়তি। ফলে তাঁর আর মেগানের এ সব নিয়ে আর কোনও সমস্যা নেই।

বইয়ের একটি অংশে হ্যারি লিখেছেন, তিনি ও উইলিয়াম রাজা তৃতীয় চার্লসকে বলেছিলেন, ‘আমরা ক্যামিলাকে মেনে নিয়েছি। কিন্তু দয়া করে ওঁকে বিয়ে কোরো না। একসঙ্গে থাকো।’’ হ্যারি জানিয়েছেন, তাঁর বাবা কোনও উত্তর দেননি। কিন্তু ক্যামিলা দিয়েছিলেন। সোজাসুজি। ওই কথাবার্তার পরই বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছিলেন ক্যামিলা। ক্রমে মুকুটের লক্ষ্যে এগোনো। হ্যারি বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই এতে বাবার সম্মতি ছিল।’’

হ্যারি জানিয়েছেন, ‘উইলি’-র সঙ্গে ক্যামিলার ব্যক্তিগত ভাবে যা যা কথা হয়েছিল, সব খবরের কাগজে বেরিয়ে গিয়েছিল। উইলিয়াম সংবাদমাধ্যমকে জানাননি। অতএব সে সব কথা ওই দিক থেকেই বেরিয়েছিল। ডিউক অব এডিনবরার মৃত্যুর পর দুই ভাইয়ের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়ে যায়। উইলিয়াম সে সময়ে ‘মায়ের নামে’ শপথ নিয়েছিলেন, তিনি শুধু ভাইয়ের ভাল চান।

হ্যারি আরও বলেছেন, ওপরা উইনফ্রে-র শোয়ে তাঁরা রাজপরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘জাতিবিদ্বেষের’ অভিযোগ তোলেননি। সেটা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বলেছিল। তাঁদের সন্তান আর্চির গায়ের রং নিয়ে রাজপরিবারের তরফে যে কথা বলা হয়েছিল, তা ‘অসচেতন ভাবে পক্ষপাতিত্ব’, জাতিবিদ্বেষ নয়। হ্যারি বলেন, ‘‘বাঁধাধরা একটা মানসিকতা বাধা হয়ে উঠেছিল। মেগান আমেরিকান অভিনেত্রী, বিবাহবিচ্ছিন্ন, মিশ্র জাতির...।’’ তবে হ্যারি বেশ জোর দিয়েই জানিয়েছেন, যা-ই হয়ে থাকুক, মেগানকে বিয়ে করা নিয়ে কখনও বাধা দেননি উইলিয়াম ও কেট। বিয়েতে হ্যারির দাড়ি রাখা নিয়েও ঝামেলা হয়েছিল। রাজপরিবারে নিয়ম অনুযায়ী বিয়ের সময়ে বরের দাড়ি রাখা চলবে না। উইলিয়াম তাঁর উপর চাপ দিয়েছিলেন। হ্যারি বোঝান, দাড়িতে তিনি সচ্ছন্দ বোধ করেন।

তবে এখন তিনি এ সবের থেকে অনেক দূরে ভাল আছেন বলে জানিয়েছেন রাজকুমার। তাঁর কথায়, ‘‘মিথ্যে বলব না, গত কয়েকটা বছর খুব কঠিন ছিল। কিন্তু সত্যিটা হল, আমি এখনের মতো ভাল আগে কখনও ছিলাম না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন