যুগলে: হ্যারি-মেগান। ছবি: রয়টার্স।
প্রথম দর্শনে প্রেম বলা যাচ্ছে না! তবে প্রথম দিনের সাক্ষাতেই জানতেন, এ-ই সে! মায়ের প্রিয় বাগানে প্রেমিকা মেগান মার্কলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ক্যামেরার সামনে প্রাণখোলা হাসিতে তেমনটাই জানালেন ব্রিটেনের রাজকুমার হ্যারি।
গোটা দুনিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে জানল, আগামী বসন্তে মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কলের (৩৬) সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন প্রাক্তন যুবরানি ডায়ানার ছোট পুত্র (৩৩)। তার পর থেকে লন্ডনের কেনসিংটন প্যালেসের নটিংহ্যাম কটেজই হবে নবদম্পতির ঠিকানা। দাদা-বৌদি উইলিয়াম-কেটের প্রতিবেশী হবেন হ্যারি-মেগান।
২০১৩ সালে মেগানের প্রথম বিয়েতে ইতি পড়ে। হ্যারির হাত ধরে এগোনো শুরু দেড় বছর আগে। চার-ছ’মাস সম্পর্ক গোপন রাখার পরে বছর খানেক আগে হ্যারি জানান, তিনি মেগানে মগ্ন! এর পর রাজপরিবারের ঐতিহ্য মেনে ঠাকুরমা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে গিয়ে বিয়ের অনুমতি চেয়েছিলেন হ্যারি। নিজের ৭০তম বিবাহবার্ষিকীর মাসেই নাতির পছন্দে ‘হ্যাঁ’ বলে দেন ঠাকুরমাও।
মেগানের আগমনে রাজপরিবারে তৈরি হবে নতুন রেকর্ড। কারণ মার্কিন এই অভিনেত্রীর মা কৃষ্ণাঙ্গ। এর আগে এমন কেউ রাজপরিবারের সদস্য হননি। লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম মেগানের। নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব কমিউনিকেশন থেকে স্নাতক। তার পরে অভিনয়ে হাত পাকানো। হ্যারি-মেগানের সম্পর্ক নিয়ে চর্চা চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। এ মাসের গোড়ায় লন্ডনে গোপনে তাঁদের বাগ্দান-পর্বও সারা হয়। রানি এবং রাজপরিবারের হাতে গোনা ঘনিষ্ঠরা জানতেন এই কথা। গত সপ্তাহান্তে এ নিয়ে হঠাৎ আলোড়ন তৈরি হয়। খবরের জগতে ফাঁস হয়ে যায়, হ্যারি তাঁর প্রেমিকার জন্য পুলিশি নিরাপত্তা চেয়েছেন।
উড়ো খবর ছড়াতে না দিয়ে বাবা যুবরাজ চার্লস এক বিবৃতিতে জানান, ‘ছেলের সুখবর ঘোষণা করতে পেরে খুশি। হ্যারিকে আশীর্বাদ করেছেন মেগানের বাবা-মাও।’ সম্ভবত ২০১৮-র মার্চেই চার হাত এক হবে। ঘোষণার পরে সোমবার বিকেলে কেনসিংটন প্যালেসের বাইরে ক্যামেরার সামনে এসে হাসিমুখে দাঁড়ান হবু দম্পতি। মেগানের আঙুলে ছিল হ্যারির পছন্দে তৈরি হিরের আংটি। যার দু’টি হিরে আবার ডায়ানার সংগ্রহ থেকেই নেওয়া।
ভাইয়ের বিয়ের খবরে দারুণ খুশি উইলিয়াম-কেট। তাঁরা বলেছেন, ‘‘মেগানের সঙ্গে আলাপ করে ভাল লেগেছে। দু’জনেই অসাধারণ!’’ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-ও রাজবাড়ির সুখবরে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন। অসম্ভব খুশি মেগানের বাবা-মা টমাস মার্কল ও ডোরিয়া র্যাগল্যান্ডও।
তবে এই পর্যন্ত পৌঁছতে অনেক ঝড়ঝাপ্টা পেরোতে হয়েছে প্রেমিক-প্রেমিকাকে। মা ডায়ানার মতোই হ্যারির পিছনেও হাত ধুয়ে পড়েছে পাপারাৎজিরা। হয়েছে আইনি লড়াই। আপাতত, সব ভাল যার শেষ ভাল।