মার্কিন ড্রোন হামলায় হত ইরানের সেনাকর্তা

আমেরিকা-বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে প্রতিবেশী ইরাক-সহ পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়ায় আরও তিন হাজার সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা।

Advertisement

  সংবাদ সংস্থা

বাগদাদ শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:২০
Share:

বিক্ষোভ: সোলেমানিকে হত্যার প্রতিবাদে আমেরিকা-বিরোধী সমাবেশ। শুক্রবার তেহরানে। এপি

মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হলেন ইরানের অন্যতম শীর্ষ সেনাকর্তা কাসেম সোলেমানি। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই শুক্রবার ভোররাতে ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে এই হামলা চালানো হয়। সোলেমানি ছাড়া আরও ছ’জন এই হামলায় নিহত হয়েছেন। তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করে ইরান হুমকি দিয়েছে, এর ফল ভুগতে হবে আমেরিকাকে।

Advertisement

শুক্রবার ভোররাতে বাগদাদ বিমানবন্দরের ঠিক বাইরে দু’টি গাড়ির উপরে ড্রোন হামলা হয়। গাড়িতে কে ছিলেন, তা স্পষ্ট হওয়ার আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকার জাতীয় পতাকার ছবি টুইট করেন। কিছু ক্ষণের মধ্যে জানা যায়, গাড়িতে ছিলেন ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ড কোরের মেজর জেনারেল তথা কাডস বাহিনীর প্রধান সোলেমানি। ইরানের মদতপুষ্ট ইরাকের ভাড়াটে সৈন্যবাহিনীর নেতা আবু মাহদি আল-মুহানদিসও ছিলেন একটি গাড়িতে। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এস্পার বলেন, ‘‘ইরান ও তার আশপাশের এলাকায় থাকা মার্কিন নাগরিক, মার্কিন সেনা ও মার্কিন সম্পত্তির উপরে লাগাতার হামলা চালানো বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ।’’ পেন্টাগনের তরফ থেকেও স্বীকার করে নেওয়া হয়, ‘জঙ্গি’ সোলেমানিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশেই হত্যা করা হয়েছে।

আমেরিকা সোলেমানিকে ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিলেও আদতে তিনি ইরানি সেনাবাহিনীর অন্যতম শীর্ষকর্তা এবং পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী ব্যক্তি ছিলেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও সে দেশের ধর্মগুরু আলি খামেনেইয়ের পরেই তাঁর স্থান ছিল। ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি কাডস বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। বিদেশের মাটিতে ইরানপন্থী ভাড়াটে সৈন্যদের পরিচালনা করাই ছিল তাঁর কাজ। তাঁর মদতেই সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকার আইএস দমনে সফল হয়েছিল। তা ছাড়া, তালিবানদের নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সোলেমানির সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এ হেন সেনাকর্তার নিধনে ইরানের সরকারি স্তরে তো বটেই, সাধারণ মানুষের মধ্যেও আমেরিকা-বিরোধী মনোভাবে ঘি পড়েছে। আজ তেহরানে সোলেমানির স্মৃতিতে বিশাল জনসমাবেশ হয়। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এই হামলাকে ‘জঘন্য অপরাধ’ আখ্যা দিয়েছেন। ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভাদ জারিফ এই হানাকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ’ বলে নিন্দা করে টুইটারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘এর ফল ভুগতে হবে আমেরিকাকে।’’

Advertisement

আমেরিকা-বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে প্রতিবেশী ইরাক-সহ পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়ায় আরও তিন হাজার সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা। তা ছাড়া, বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতি জারি করে মার্কিন পর্যটকদের ইরাক ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। ফ্লরিডায় ট্রাম্প আজ বলেন, ‘‘আমেরিকা ইরানের শাসনে পরিবর্তন চায় না। হামলার উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধ থামানো, যুদ্ধ শুরু নয়। সোলেমানি মার্কিন কূটনীতিকদের উপরে হামলার ছক কষছিলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন