জেরবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া

রোহিঙ্গারা ঘুম কেড়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জেরও

ভূমধ্যসাগরে ভাসমান কতগুলো ছোট ছোট কাঠের নৌকো। আফ্রিকার নানা দেশ থেকে আসা শরণার্থীতে ঠাসা। মাসখানেক আগে এই ছবিটাই তীব্র আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ইউরোপের কাছে। মাস ঘুরতে না ঘুরতে সেই একই ছবি। তবে এ বার ইউরোপ নয়। মায়ানমার থেকে পালানো হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ঘুম কেড়ে নিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের। চিন্তায় রাষ্ট্রপুঞ্জও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৫ ০২:৪৮
Share:

ভূমধ্যসাগরে ভাসমান কতগুলো ছোট ছোট কাঠের নৌকো। আফ্রিকার নানা দেশ থেকে আসা শরণার্থীতে ঠাসা। মাসখানেক আগে এই ছবিটাই তীব্র আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ইউরোপের কাছে। মাস ঘুরতে না ঘুরতে সেই একই ছবি। তবে এ বার ইউরোপ নয়। মায়ানমার থেকে পালানো হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ঘুম কেড়ে নিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের। চিন্তায় রাষ্ট্রপুঞ্জও।

Advertisement

সমস্যার শুরু কয়েক সপ্তাহ আগে। সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নির্যাতন ও সরকারি অব়জ্ঞা থেকে বাঁচতে দেশ ছাড়তে শুরু করেন মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা। নৌকো বা জাহাজে। বঙ্গোপসাগর বা আন্দামান সাগর পেরিয়ে গন্তব্য ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া বা তাইল্যান্ড। সেই শুরু। কয়েক জনের দেখানো সেই পথই তার পর অনুসরণ করতে শুরু করেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। সঙ্গ নেন মায়ানমারে বসবাসকারী বেশ কিছু বাংলাদেশিও। প্রথমে এই সব শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে অস্বীকার করলেও পরে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে মালয়েশিয়া আর তাইল্যান্ড।

কিন্তু দিন যত গড়াচ্ছে, শরণার্থী সমস্যা ততই বড় আকার নিচ্ছে। এর মধ্যেই মালয়েশিয়া আর তাইল্যান্ড জানিয়েছে, এক বছরের বেশি এই সব শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়।
ফলে আসরে নেমেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। মায়ানমার যে গোটা বিপর্যয়ের দায় এড়াতে পারে না, তা বারবার দেশের সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। গত কাল পর্যন্ত তাতে আমল দেয়নি মায়ানমার সরকার। বস্তুত এত দিন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশের নাগরিক বলে স্বীকৃতিই দেয়নি তারা। সামরিক জুন্টা সরকারের আমল থেকেই চলে এসেছে এই রীতি। পাঁচ বছর আগে, ২০১০ সালে দেশের সাধারণ নির্বাচনের পরে ক্ষমতা হস্তান্তর হলেও রোহিঙ্গাদের প্রতি মনোভাব পাল্টায়নি। কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে শেষমেশ নতি স্বীকার করেছে মায়ানমার। কালই তারা জানিয়েছে, ব্যাঙ্ককে আগামী সপ্তাহে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের যে বৈঠক রয়েছে, তাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেবে তারা।

Advertisement

তবে মায়ানমারের সেনা প্রধানের দাবি, ইন্দোনেশিয়া, তাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় এ মাসে যে শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই নিজেদের রোহিঙ্গা দাবি করলেও তাঁরা আদতে রোহিঙ্গা নন। রাষ্ট্রপুঞ্জের ত্রাণের লোভেই তাঁরা নিজেদের রোহিঙ্গা বলে দাবি করছেন। সেনাপ্রধানের এই মন্তব্যের পরেই সংবাদমাধ্যমে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমস্যা লঘু করতেই এমন মন্তব্য করেছেন সেনাপ্রধান।

রাষ্ট্রপুঞ্জ অবশ্য বিষয়টিকে হাল্কা ভাবে নিচ্ছে না। তাদের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন আজই জানিয়েছে, অন্তত তিন হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী এখনও আন্দামান সাগরে ভাসছেন। তাদের অবিলম্বে খাবার আর জল দরকার। বেশি দিন এ ভাবে সমুদ্রে ভেসে থাকলে ওই সব শরণার্থীকে শেষ পর্যন্ত না খেয়ে মরতে হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement