Taliban: বর্তমান পরিস্থিতিতে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নই নেই, জানিয়ে দিল রাশিয়া

আফগান সাংবাদিক, বিচারক, আইনজীবী, সমাজকর্মী এবং মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলো।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:১৯
Share:

সহমর্মী: মায়ের সঙ্গে আফগানিস্তানের মহিলাদের পাশে থাকার বার্তা দিল এই আফগান শিশুকন্যাও। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরের সামনে। রয়টার্স ।

Advertisement

নিউ ইয়র্ক, ২৬ সেপ্টেম্বর: তালিবানের দাবি ছিল তারা বদলে গিয়েছে। যদিও ‘তালিবান ২.০’-য় ভরসা ছিল না কারও। আশঙ্কা সত্যি করে সম্প্রতি তালিবান কারাপ্রধান মোল্লা নুরুদ্দিন তোরাবি বলেন, শরিয়ত মেনে তৈরি করা হবে দেশের আইন। অপরাধের শাস্তি হিসেবে হাত-পা কেটে নেওয়া বা প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যাকে আইন করে ফিরিয়ে আনা হবে। পরের দিনই হেরাটের রাস্তায় দেখা মেলে ক্রেনের মাথায় ঝুলছে মৃতদেহ। এ সব ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে সন্ত্রস্ত বহির্বিশ্ব। তীব্র নিন্দা করেছে আমেরিকার বিদেশ দফতর। রাশিয়া জানিয়েছে, আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা তারা এখন ভাবতেই চায় না।

আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস আজ জানান, এই ধরনের ‘আইন’ সম্পূর্ণ ভাবে মানবাধিকার ভঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘তালিবান মুখে কী বলছে, আমরা সেটুকুই শুধু শুনছি, এমন নয়। তারা কী কী কাজ করছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাইস। আফগান সাংবাদিক, বিচারক, আইনজীবী, সমাজকর্মী এবং মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলো। তবে আফগানিস্তানের জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে আর মাথা ঘামাতে চায় না আমেরিকা। পেন্টাগনের প্রেস সচিব জন কিরবি জানিয়েছেন, সন্ত্রাসদমনে ‘এয়ারস্ট্রাইক’ নিয়ে তালিবানের সঙ্গে কথা চালানোর কোনও প্রয়োজন দেখছে না আমেরিকা। আকাশপথে হামলাও তারা আর করবে না বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।

Advertisement

তাদের বিরুদ্ধে ওঠা একরাশ অভিযোগ নিয়ে তালিবান কারাপ্রধান তুরাবির বক্তব্য, ‘‘আমরা ওদের দেশের আইন নিয়ে মাথা ঘামাই না। ওরা কেন আমাদের আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলবে!’’ যদিও এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসঙ্গ তুলেই রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এ দিন জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে মান্যতা দেওয়ার কথা তাঁরা ভাবছেনই না। নিউ ইয়র্কের রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় তিনি বলেন, ‘‘তালিবান সরকারকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার যে প্রশ্ন, তা বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাবার অবস্থায় নেই।’’

তালিবান বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি গত সোমবার ঘোষণা করেন, তাঁরা তালিবান মুখপাত্র সুহেল শাহিনকে রাষ্ট্রপুঞ্জের আফগান দূত হিসেবে মনোনীত করেছেন। এ-ও জানান, প্রাক্তন আফগান দূত গুলাম ইশাকজ়াইকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যদিও শাহিনকে স্বীকৃতি দেবে কি না রাষ্ট্রপুঞ্জ, সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেও লাভরভ রুশ সিদ্ধান্তের কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাতেই প্রশ্ন থাকছে, তালিবান যে আশ্বাসের বাণীই শোনাক, তাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আপাতত হয়তো মিলছে না।

আফগান তালিবান সরকারকে রাষ্ট্রপুঞ্জ স্বীকৃতি দেবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জের ক্রেডেনশিয়ালস কমিটি। এই কমিটির নয় সদস্যের মধ্যে অন্যতম রাশিয়া। ফলে রুশ সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছে চিন ও আমেরিকা। চিন তালিবান সরকারকে সুযোগ দেওয়া কথা বললেও আমেরিকা আফগানিস্তানের মানবাধিকার ভঙ্গ নিয়ে চিন্তিত। এ নিয়ে শীঘ্রই সামগ্রিক ভাবে বৈঠকে বসার কথা কমিটির। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস অবশ্য জানিয়েছেন, তালিবানের উদ্দেশ্যসাধনের, অর্থাৎ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পাওয়ার একমাত্র উপায়, যথাযথ সরকার গঠন করতে হবে। এবং মানবাধিকার, বিশেষ করে মহিলাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে তালিবান সরকারকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন