(বাঁ দিকে) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণার প্রস্তাব এসেছিল ইউক্রেনের তরফে। শুধু ইউক্রেন নয়, জার্মানি, পোল্যান্ড, ফ্রান্স, ব্রিটেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলিও রাশিয়ার কাছে একই আবেদন করেছিল। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে সে আবেদনে সাড়া দেননি, তা স্পষ্ট হল নতুন করে ইউক্রেনে আক্রমণের ঝাঁজ বৃদ্ধির ঘটনায়। ইউক্রেনের বায়ুসেনা জানিয়েছে, রবিবার রাতে তাদের দেশে ১০০টিরও বেশি ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া!
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। হামলা, পাল্টা হামলায় বিধ্বস্ত দুই দেশেরই বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রাণ হারিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ঘরছাড়া অনেকেই। সেই আবহে আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশ উদ্যোগী হয়ে যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত সেই চেষ্টা সফল হয়নি। সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও পুরোপুরি যুদ্ধ বন্ধের কোনও লক্ষণ দেখা দেয়নি।
এর মধ্যেই ইউক্রেন-সহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ, রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়। তাদের প্রস্তাব ছিল, সোমবার থেকে আগামী ৩০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতিতে রাজি হোক মস্কো। তবে কোনও শর্ত চাপানো যাবে না। ইউক্রেন সরকারের সূত্রে জানানো হয়, নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সমর্থন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তা-ই নয়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দিয়েছে ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশগুলি। সেই আবহেই রবিবার মস্কোর তরফে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
পুতিনের সরকার জানায়, স্থায়ী সমাধান খুঁজতে ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে রাজি রাশিয়া। আগামী ১৫ মে ইস্তানবুলে সেই আলোচনা হতে পারে বলেও জানান পুতিন। তবে তিনি তাঁর প্রস্তাবে কখনওই ইউরোপীয় দেশগুলির যুদ্ধবিরতির দাবির কথা উল্লেখ করেননি। তবে রাশিয়াবিরোধী মন্তব্য এবং ইউরোপীয় দেশগুলির ‘হুমকি’র নিন্দা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। পুতিনের কথায়, ‘‘কিভ যদি কোনও পূর্বশর্ত ছাড়া সরাসরি আলোচনা শুরু করতে চায়, তবে আমরা রাজি।’’
পুতিনের এই প্রস্তাব নিয়ে সরকারি ভাবে ইউক্রেনের তরফে কিছু জানানো হয়নি। দুই দেশ কি আবার আলোচনার টেবিলে বসবে? যুদ্ধের পথ থেকে সরে আসতে রাজি হবে? এই সব প্রশ্ন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে যখন আলোচনা চলছে, সেই আবহেই রুশ সেনাবাহিনী ইউক্রেনে ড্রোন হামলা করে, এমনই দাবি করল ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।
২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিন থেকেই রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির তরফে। কিন্তু বার বার তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। যুদ্ধপর্বে এখনও পর্যন্ত পুতিন-জ়েলেনস্কি মুখোমুখি বৈঠকে বসেননি। দুই রাষ্ট্রনেতা শেষ বার মুখোমুখি হন ২০১৯ সালে।