সানায়ে তাকাইচি। — ফাইল চিত্র।
জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন সানায়ে তাকাইচি। মঙ্গলবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ভোটাভুটিতে জিতে গিয়েছেন লিবার্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি)-র এই নেত্রী। এ বার জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার স্থলাভিষিক্ত হতে চলেছেন ৬৪ বছরের সানায়ে। শুধু তা-ই নয়, তিনিই হতে চলেছেন দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী!
সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস-এর প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার জাপানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ভোট শুরু হয়। জাপানের বৃহত্তম বিরোধী দল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-র প্রধান ইয়োশিকোকো নোদা পান ১৪৯টি ভোট। অন্য দিকে, ২৩৭টি ভোট পেয়ে জয়ী হন সানায়ে। নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ভোটের চেয়ে চারটি ভোট বেশি পান তিনি। উচ্চকক্ষে পান ১২৫টি ভোট। ফলাফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে সকলকে অভিবাদন জানান সানায়ে।
গত মাসেই জাপানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন শিগেরু ইশিবা। গত দু’টি নির্বাচনে হারের মুখ দেখায় এলডিপি-র মধ্যে ইশিবাকে নিয়ে অসন্তোষ জন্মাচ্ছিল। গত জুলাইয়ে জাপান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারান ইশিবা। এর পরেই ইশিবাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শুধু বিরোধীদের মধ্যে নয়, দলের অভ্যন্তরেও ইশিবার পদত্যাগের দাবি ওঠে। সেই আবহে এলডিপি জানিয়ে দেয়, কট্টরপন্থী সানায়েকে দলের নয়া নেত্রী নির্বাচন করা হয়েছে। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ভোটে জিতলে তিনিই হতে চলেছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। অবশেষে মঙ্গলবার তা-ই হল।
জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে সমাজমাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের এক্স হ্যান্ডলে মোদী লিখেছেন, ‘‘সানায়ে তাকাইচি, জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার এই জয়ের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। ভারত-জাপানের কূটনৈতিক সম্পর্ক ও বন্ধুত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে আমি খুবই আগ্রহী। দুই দেশের এই গভীর বন্ধুত্ব ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্যও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।’’
তবে সানায়ের সামনে আপাতত রয়েছে বড় পরীক্ষা— জাপানের মহিলাদের সমর্থন আদায়। কারণ, অতি কট্টরপন্থী হওয়ার পাশাপাশি সানায়ে ‘পুরুষতান্ত্রিক’ বলেও পরিচিত। সাম্প্রতিক ইতিহাসে জাপানে মহিলাদের উন্নয়নের জন্য যে যে পদক্ষেপ করা হয়েছে বা বিল আনা হয়েছে, তার বিরোধিতা করেছেন সানায়ে। অতীতে একাধিক বার তিনি বলেছেন, মেয়েদের সকলের আগে ভাল স্ত্রী ও মা হওয়া উচিত। সমকামী সম্পর্ক ও বিবাহেরও বিরোধিতা করেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর দল এলডিপি-রও একই মত। ফলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় খুব একটা খুশি নন সে দেশের মহিলা ও প্রান্তিক যৌনতার মানুষের বড় অংশ।