Coronavirus

ব্রিটেনের পরে দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেন নিয়ে আতঙ্ক

‘ব্রিটেন-স্ট্রেন’-এর ভয়ে বরিস জনসনের দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে রেখেছে বহু দেশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:০৩
Share:

—প্রতীকী ছবি

এক দিকে ‘অস্ত্র’ তৈরি হচ্ছে, অন্য দিকে ‘শত্রু’ও তার ভোলবদল করছে। ফলে ভাইরাস-বধে সম্ভাব্য টিকাগুলি কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ‘ব্রিটেন স্ট্রেন’। বিজ্ঞানীরা বলছেন একাধিক মিউটেশন ঘটে এটি এখন ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। এর মধ্যেই খবর, দক্ষিণ আফ্রিকাতেও রহস্য ঘনাচ্ছে নতুন একটি স্ট্রেন— ‘৫০১ভি২’।

Advertisement

‘ব্রিটেন-স্ট্রেন’-এর ভয়ে বরিস জনসনের দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে রেখেছে বহু দেশ। ইউরোপে প্রায় ‘একঘরে’ ব্রিটেন। ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি থেকে বুলগেরিয়া, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে অনেকেই। পরিস্থিতি সামলাতে ক্রমশই কড়াকড়ি বাড়াচ্ছে ব্রিটেন। টিয়ার-৪ লকডাউন চলছে। এ বছর গোটা উৎসবের মরসুমেই নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকবে বলে জানিয়েছে সরকার। প্রশাসনের সন্দেহ, নতুন স্ট্রেনটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এ দেশে ছড়িয়ে থাকতে পারে। কারণ, ওই দেশেও একটি রহস্যজনক স্ট্রেন ছড়িয়েছে। যার সঙ্গে ‘ব্রিটেন-স্ট্রেন’-এর মিল রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত নতুন এক জনের দেহে আজ ওই স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে প্রবেশে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। সেই সঙ্গে সরকারের আবেদন, গত দু’সপ্তাহে কেউ যদি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে ফিরে থাকেন বা এমন কারও সংস্পর্শে এসে থাকেন, তা হলে অবিলম্বে কোয়রান্টিনে যান।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা তাঁদের স্ট্রেনটিকে ‘৫০১.ভি২’ নাম দিয়েছেন। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, এটি শুধু বেশি সংক্রামকই নয়, কমবয়সিদের শরীরে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি টিকার কার্যকারিতাতেও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা গবেষকদের।

Advertisement

আরও পড়ুন: এগ্রি গোল্ড দুর্নীতিতে ৪ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ইডি-র

আরও পড়ুন: তিন মেদিনীপুরের ৩৫ টি আসনই দখল করবেন, দাবি শুভেন্দুর

দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন কেপ, কোয়াজুলু-নাটাল এবং ওয়েস্টার্ন কেপ প্রদেশে প্রথম ধরা পড়ে করোনাভাইরাসের এই স্ট্রেনটি। এ দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রথম সংক্রমণের খবর আসে নেলসন ম্যান্ডেলা বে থেকে। ভাইরাসের এই প্রকারভেদে অন্তত তিনটি মিউটেশনের কথা জানা গিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ রিচার্ড লেসেলস জানিয়েছেন, বর্তমানে যে ভ্যাকসিনগুলো তৈরি হয়েছে, সেগুলো কতটা কাজ দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এমনকি এক বার করোনা হয়ে যাওয়া ব্যক্তিও এই স্ট্রেনে নতুন করে আক্রান্ত হতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এত লক্ষ লক্ষ ডলার ব্যয় করে, এত পরিশ্রম করে যে ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে, তা আদৌ ভাইরাস বধ করতে কাজে দেবে তো? ভাইরাসের শেষ হবে তো?টিকা-প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘বায়োএনটেক’-এর স্রষ্টা উগর শাহিন জানাচ্ছেন, এখনই শেষ হচ্ছে করোনা-অধ্যায়। ফাইজ়ার ও বায়োএনটেক জুটির তৈরি করোনা-টিকাই বিশ্বে সর্বপ্রথম ছাড়পত্র পেয়েছে। আর এই কর্মকাণ্ডে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন বিজ্ঞানী শাহিন। ভ্যাকসিন-বিশেষজ্ঞ শাহিন বলেন, ‘‘টিকা তৈরি হলেও আগামী আরও ১০ বছর আমাদের সঙ্গে থেকে যাবে ভাইরাস।’’ তা হলে সব কিছু আর আগের মতো স্বাভাবিক হবে না? শাহিনের বক্তব্য, ‘‘আরও সংক্রমণ হবে। এই বাস্তব পরিস্থিতিতে আমাদের অভ্যস্ত হতে হবে। এমনকি ‘স্বাভাবিক’ শব্দটারও এখন নতুন অর্থ হওয়া প্রয়োজন।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন