Asterix

সিজারকে আটকে দেওয়া ‘অ্যাস্টেরিক্স’ কি বাস্তবেও ছিল? কবর ঘিরে চাঞ্চল্য

তখন সমগ্র ইউরোপই প্রায় জুলিয়াস সিজারের দখলে, পরাক্রমী সম্রাটকে রোখার ক্ষমতা হচ্ছিল না কারও। এই সময় জুলিয়াস দখল করতে গেলেন পশ্চিম ইউরোপে গল-দের রাজ্য। রোমান সম্রাটের বিজয় রথ আটকে গেল এখানেই, বাকি জায়গা দখল করলেও কিছুতেই আর দখল করতে পারছিলেন না গল-দের একটি ছোট্ট গ্রাম। কেন?

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ১৪:৩৪
Share:
০১ ১৩

তখন সমগ্র ইউরোপই প্রায় জুলিয়াস সিজারের দখলে, পরাক্রমী সম্রাটকে রোখার ক্ষমতা হচ্ছিল না কারও। এই সময় জুলিয়াস দখল করতে গেলেন পশ্চিম ইউরোপে গলদের একটি রাজ্য। রোমান সম্রাটের বিজয় রথ আটকে গেল এখানেই, বাকি জায়গা দখল করলেও কিছুতেই আর দখল করতে পারছিলেন না গলদের একটি ছোট্ট গ্রাম। কেন?

০২ ১৩

কারণ এই গ্রামেই বাস করত অ্যাস্টেরিক্স। খ্রিস্টপূর্ব ৫০ শতাব্দীতে রোমানদের সঙ্গে যুদ্ধ হয় অ্যাস্টেরিক্সের। অ্যাস্টেরিক্সকে হারানো অসম্ভব হয়ে ওঠে সিজারের কাছে। কারণ? তার কাছে রয়েছে এক আশ্চর্য জড়িবুটি। এই জড়িবুটি খেয়েই তার গায়ে আসে বিশাল শক্তি।

Advertisement
০৩ ১৩

অ্যাস্টেরিক্সের কমিকস কম বেশি আমরা সবাই-ই পড়েছি। মূল চরিত্র অ্যাস্টেরিক্স ও তার প্রিয় বন্ধু ওবেলিক্সের নানা দুঃসাহসিক অভিযানের কাহিনিও জানা। বাস্তবের চরিত্রের উপর ভিত্তি করে কমিকসের চরিত্র তৈরি হলেও কমিকসের চরিত্রকে বাস্তবে পরিণত হয়েছে দেখেছেন? ব্রিটেনে ঘটেছে এমনই এক ঘটনা।

০৪ ১৩

এ বার কমিকসের চরিত্র অ্যাস্টেরিক্সের উপস্থিতির প্রমাণ মিলল ব্রিটেনের পশ্চিম সাসেক্সের এক বিল্ডিং সাইটের সমাধিতে। উদ্ধার হওয়া সেই সমাধি পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞদের দাবি, তিনি হয়তো ছিলেন একজন ইউরোপীয় যোদ্ধা, যিনি জুলিয়াস সিজারের সঙ্গে যুদ্ধ করতেই খ্রিস্টপূর্ব ৫০ শতাব্দীতে ব্রিটেনে এসেছিলেন।

০৫ ১৩

সমাধির মধ্যে থেকে মিলেছে তার মাথার উজ্জ্বল অলংকারযুক্ত মুকুট, তলোয়ার। লৌহ যুগের এই যোদ্ধার কবরটি ২০০৮ সালে সাসেক্সের বেরস্টেডের ‘বার্কলে হোমস হাউসিং ডেভেলপমেন্ট’ এর সামনে খননকার্য চলার সময় পাওয়া যায়। এত বছর ধরে গবেষণা চালানোর পর গবেষকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ২০২০ সালে চিচেস্টার-এর নভিয়াম মিউজিয়ামে প্রদর্শন করা হবে বাস্তবের অ্যাস্টেরিক্সকে।

০৬ ১৩

প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, ইংল্যান্ডে পাওয়া অন্য কোনও যোদ্ধার সমাধি এই সমাধির মতো এত সজ্জিত নয়। তারা এই 'অ্যাস্টেরিক্স'এর দেহ ও আনুসাঙ্গিক অস্ত্রগুলি প্রথমে সংরক্ষণ করে তারপর গবেষণা চালিয়েছেন। সংরক্ষণের জন্য প্রথম দু’বছর লাগলেও এরপর নানা প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা চালানো হয় কবরটিতে।

০৭ ১৩

ম্যাঞ্চেস্টার ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মেলানি গিলস বলেন, এটি সত্যিই এক অনন্য সন্ধান। এরকম গুণমানের অস্ত্রের দেখা মেলেনি এর আগে। সমাধিতে সেলটিক শিল্পকে এমন সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা সিজারের সময়কালের সঙ্গে আমাদের সরাসরি সংযুক্ত করতে পারে।

০৮ ১৩

তিনি আরও বলেন, হয়তো কখনওই এই যোদ্ধার নাম জানা যাবে না। তবে গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে তিনি হয়তো পূর্ব ইংল্যান্ডের কোনও জায়গার বাসিন্দা ছিলেন, যিনি গল-দের হয়ে জুলিয়াস সিজারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। আবার তিনি ফ্রান্সের বাসিন্দাও হতে পারেন, যিনি নিজেই সিজারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন তার ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ পরিকল্পনা জানতে পেরে।

০৯ ১৩

সমাধি থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলি দেখে বোঝা যায়, সেলটিক যুগে কতটা উন্নত ছিল তাদের অস্ত্র তৈরি করার পদ্ধতি। পূর্ব বা পরবর্তী কোনও সময়ের তলোয়ারের সঙ্গেই মিল পাওয়া যায়নি উদ্ধার হওয়া এই তলোয়ারের। সম্পূর্ণ নতুন এক প্রযুক্তি, স্টাইল এবং ডিজাইনের এই তলোয়ারটিতে এখনও ক্ষয় হয়নি তেমন।

১০ ১৩

হেলমেট বা মুকুটটি দেখে তাঁর উচ্চতা ও চেহারার আন্দাজ করা যায় কিছুটা। কমিকসে অ্যাস্টেরিক্সের চেহারার যেমন বর্ণনা করা হয়েছে, আসল অ্যাস্টেরিক্সের চেহারা ছিল তার থেকে অনেকটাই আলাদা। তাঁর দেহ ছিল বিশালাকায়। এই বিশাল চেহারার জন্য যেমন পরিবেশের হাত রয়েছে, তেমনই রয়েছে তাদের খাদ্যাভাসের প্রভাবও।

১১ ১৩

তার কবরটিও ছিল বেশ সুসজ্জিত। যে হেতু এর আগে এই রকম কোনও যোদ্ধার সমাধি উদ্ধার হয়নি, তাই তাঁদের রীতি, আচার, আচরণ কী রকম ছিল তা জানা যায়নি। তবে এই যোদ্ধার দেহের সঙ্গে যে হেতু তার মুকুটটিও রাখা ছিল, তাই অনুমান করা যায়, সেই যুগের যোদ্ধাদের হয়তো তাঁদের অস্ত্র ও যুদ্ধে আনা যাবতীয় সম্পত্তি সমেত সমাধি দেওয়া হত।

১২ ১৩

অতীতে দক্ষিণ ইউরোপের এক দল বাসিন্দা ‘সেল্ট’ নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁদের কলাকৌশলী বা শিল্পকেই ‘সেলটিক’ শিল্প বলা হয়। এই সেলটিক শিল্প বেশ আলাদা ধরনের। এতে সরাসরি কোনও রেখা আঁকা হত না। তার বদলে গিঁট দেওয়া সর্পিল রেখা এবং উদ্ভিদ ও মানুষের চেহারা আঁকা হতো। এই যোদ্ধার সমাধিতেও সেলটিক শিল্পের প্রমাণ মেলে।

১৩ ১৩

তবে ‘অ্যাস্টেরিক্স’-এর সন্ধান পেলেও গলদের সেই গ্রাম এবং সেই ‘মহৌষধী’ যে একেবারেই কল্পনা, তা-ও জানিয়েছেন গবেষকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement