হাসিনার নির্দেশে তল্লাশি, জুয়া চক্রে গ্রেফতার বহু নেতা

সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখে প্রথম ঢাকার একটি ক্লাবে তল্লাশি চালিয়ে বেআইনি ক্যাসিনো-চক্রের হদিস পায় পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‌্যাব (র‌্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটেলিয়ন)। উদ্ধার হয় কয়েক কোটি টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

একের পর এক ক্লাব ও বাড়িতে পুলিশি অভিযান। উদ্ধার কোটি কোটি টাকা, মাদক। মিলেছে এত দিন ধরে গোপনে চালানো জুয়া বা ক্যাসিনোর সিন্ডিকেট। আর গ্রেফতার হওয়া মাথারা অনেকেই শাসক দলের ঘনিষ্ঠ, কেউ কেউ নানা সংগঠনের উচ্চ পদাধিকারী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই অভিযান। তাঁর ঘোষণা, ‘‘উন্নয়নে বরাদ্দ টাকা উইপোকায় খেয়ে যাচ্ছে। আইনি চিকিৎসায় সেই উইপোকাদের বিনাশে নেমেছে সরকার। দুর্নীতিবাজরা যতই প্রভাবশালী হোক, ছাড় পাবে না।’’

Advertisement

সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখে প্রথম ঢাকার একটি ক্লাবে তল্লাশি চালিয়ে বেআইনি ক্যাসিনো-চক্রের হদিস পায় পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‌্যাব (র‌্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটেলিয়ন)। উদ্ধার হয় কয়েক কোটি টাকা। সেই ক্যাসিনো-চক্রের মাথা হিসেবে ধরা হয় শাসক দলের এক যুবনেতাকে। তিনি আবার শাসক দল আওয়ামি লিগের বেশ কয়েক জন প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্ঠ। এর পর একে একে ৬টি ক্লাবে হানা দিয়ে বেআইনি ভাবে চালানো বার ও জুয়ার সিন্ডিকেট ধরে র‌্যাব। গ্রেফতার করা হয় যুবলিগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া-সহ ১৪৩ জনকে। দেহরক্ষীর বহর-সহ ধরা হয় আর এক প্রভাবশালী যুবনেতা ও ঠিকাদার শিরোমণি জি এম শামিমকে, যাঁর বিরুদ্ধে নামে-বেনামে কয়েকশো কোটি ডলারের সম্পদ তৈরির অভিযোগ রয়েছে। ঐতিহ্যশালী ঢাকা মহামেডান ক্লাবে হানা দিয়েও ক্যাসিনো চক্র পেয়েছে র‌্যাব। গ্রেফতার করা হয়েছে ক্লাবের হর্তাকর্তাদের। গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন সরকার ঘনিষ্ঠ বহু ব্যবসায়ী ও যুবনেতা।

র‌্যাব জানিয়েছে, ক্যাসিনোতে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা লেনদেন হত। যুবনেতা খালেদ জেরায় তাদের জানান, লাভের অংশ তিনি নিয়মিত প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের কয়েক জন প্রভাবশালী নেতাকে পৌঁছে দিতেন। কোনও কোনও প্রভাবশালীকে কোটি টাকা দামের গাড়িও উপহার দিতে হয়েছে। সেই টাকা বিদেশে বসবাসকারী অপরাধ জগতের মাথাদের কাছেও যায়। ধৃতদের উদ্ধৃত করে র‌্যাব জানিয়েছে, প্রাক্তন তিন মন্ত্রী, সিটি কর্পোরেশনের এক মেয়র ও পাঁচ জন সাংসদ সরাসরি ক্যাসিনো চক্রে জড়িত। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের দু-এক জনও এতে যুক্ত বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

শেখ হাসিনা নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভা সেরে ফিরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বলেন, ‘‘দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গি দমনে জীবন বাজি রাখতে প্রস্তুত। দল, আত্মীয়, পরিবার বলে কিছু নেই। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ ছাড় পাবে না!’’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন