স্কুলবাসে বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত।
সাতসকালে পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশে স্কুলবাসে বোমা বিস্ফোরণ! মৃত্যু হল তিন শিশু-সহ পাঁচ জনের। জখম অন্তত ২০ জন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম ‘ডন’ জানিয়েছে, বুধবার সকালে বালোচিস্তানের খুজদার জেলায় স্কুলপড়ুয়াদের একটি বাস লক্ষ্য করে আত্মঘাতী বোমা-হামলা চালানো হয়। বিস্ফোরণে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের মধ্যে তিন শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছে বেশ কয়েক জন। স্থানীয় পুলিশের এক ডেপুটি কমিশনার জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে ঘটনাটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণের বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও হামলার নেপথ্যে কারা রয়েছেন, তা এখনও জানা যায়নি। অপরাধীদের খুঁজতে শুরু হয়েছে তদন্ত। পাক পুলিশের ডেপুটি কমিশনার ইয়াসির ইকবাল দাস্তি সংবাদমাধ্যম ‘ডন’কে বলেন, ‘‘স্কুলবাসটি খুজদার জ়িরো পয়েন্টের কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। সে সময়েই আচমকা বিস্ফোরণটি ঘটে। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে গুরুতর আহতদের কোয়েটা এবং করাচিতে উন্নততর চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে।’’ মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি। তিন শিশুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তিনি। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছেন। নকভি বলেন, ‘‘যারা নিরীহ শিশুদের হত্যা করে, তারা ক্ষমার অযোগ্য। স্কুলবাসে থাকা শিশুদের উপর আক্রমণ করে বর্বরতার প্রমাণ দিয়েছে অপরাধীরা। এটি দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য শত্রুদের একটি জঘন্য ষড়যন্ত্র।’’ আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনাও করেছেন নকভি।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশ দীর্ঘ দু’দশক ধরে অশান্ত। গত কয়েক মাসে পাকিস্তানের পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর উপর একাধিক হামলা চালিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। গত কয়েক মাসে কাচ্চি বোলানে ট্রেন ছিনতাই, কোয়েটায় আধাসেনা ফ্রন্টিয়ার কোরের গাড়িতে আইইডি বিস্ফোরণ, নোশকিকে সেনা কনভয়ে আত্মঘাতী হামলার মতো নতুন কৌশলে হানাদারি চালিয়েছে বিএলএ। রবিবারও বালোচিস্তানের কিল্লা আবদুল্লা জেলার জব্বর মার্কেটে এক বিস্ফোরণে চার জনের মৃত্যু হয়। বেশ কয়েকটি দোকানে আগুনও লেগে যায়। বিস্ফোরণটি যেখানে হয়, তার অনতিদূরেই রয়েছে পাক সেনার ফ্রন্টিয়ার কোরের ঘাঁটি। বিস্ফোরণের পর অজ্ঞাতপরিচয় হামলাকারীদের সঙ্গে গুলির লড়াইও চলে পাক সেনার। ওই বিস্ফোরণের নেপথ্যে কারা ছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেই আবহেই ফের নতুন করে বিস্ফোরণ হল পাকিস্তানে।