দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আওউন। ছবি: এপি।
প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরির ইস্তফা দেওয়ার পর চার দিনও কাটল না। লেবানন তথা পশ্চিম এশিয়াকে আরও সন্ত্রস্ত করে সে দেশ থেকে আরবের নাগরিকদের ফিরে আসার নির্দেশ দিল সৌদি আরব। এমনকী সৌদি আরবের নাগরিকদের অন্য দেশ থেকে লেবাননে যাওয়ার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা নাগাদ সৌদির সরকারি সংবাদ মাধ্যমে এই ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই এই অঞ্চলে বাড়তে থাকে উত্তেজনা।
আরও পড়ুন: হারিরির পদত্যাগে যুদ্ধের গন্ধ
গত শনিবার, ইরানের সঙ্গে বৈঠকের পর সৌদি আরবে এসে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন লেবাননের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। তাঁর এই আচমকা ঘোষণায় নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে লেবানন। দীর্ঘ দিন ধরেই মোটামুটি দু’ভাগে বিভক্ত লেবানন। একটি শিবির চালায় ইরান সমর্থিত শিয়া হেজবুল্লা গোষ্ঠী। আর একটি শিবিরকে সমর্থন করে সুন্নি সৌদি আরব। সৌদি সমর্থিত এই গোষ্ঠীর নেতা ছিলেন হারিরি। ইস্তফা দিয়ে হারিরি ঘোষণা করেন, ইরান ও তার শরিক দল হেজবুল্লা সমগ্র লেবাননের দখল নিয়েছে। ইরানের সমর্থনে হেজবুল্লা প্রতিষ্ঠান-বিরোধী কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নেতৃত্ব সঙ্কটে থাকা লেবানন অবশ্য হারিরির পজত্যাগের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আওউন জানিয়ে দিয়েছেন, হারিরির সঙ্গে দেখা না হওয়া পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা মেনে নিচ্ছেন না। তাঁকে দেশে ফেরার আর্জি জানিয়ে হারিরির দলের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরুন হারিরি। লেবাননের সম্মান ফেরাতে এবং নাগরিকদের আতঙ্ক দূর করতে তাঁর ফেরাটা জরুরি।’ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে হারিরিকে বন্দি করে রাখারও অভিযোগ করেছে তারা। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সৌদি প্রশাসন।
হারিরির আচমকা ইস্তফার সিদ্ধান্তের পরই ইরান-সৌদি যুদ্ধের আশঙ্কা করছিলেন কূটনীতিকদের একটা বড় অংশ। এ বার দেশের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার নির্দেশে সেই আশঙ্কাই আরও জোরালো হল বলে মনে করছেন তাঁরা। আর এই দুই দেশের যুদ্ধ হলে সবচেয়ে বেশি মূল্য চোকাতে হবে নেতৃত্বহীন লেবাননকেই।