Pakistan

করাচির আকাশে যুদ্ধবিমানের দাপাদাপি! সোশ্যাল মিডিয়ায় সার্জিকাল স্ট্রাইকের জল্পনায় ঝড়

বুধবার ভোর রাত থেকেই টুইটারে নতুন ট্রেন্ড শুরু হয় #করাচিব্ল্যাকআউট। হাজার হাজার টুইট হতে থাকে এ বিষয়ে জল্পনা বাড়িয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ২১:২৪
Share:

সার্জিকাল স্ট্রাইকের জল্পনায় উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া।—প্রতীকী চিত্র।

করাচির আকাশে ভারতীয় যুদ্ধবিমান! মঙ্গলবার রাতভর এমনই জল্পনা ঘিরে সরগরম হয়ে উঠল সোশ্যাল মিডিয়া। করাচি-সহ পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দাদের করা টুইটে ফুটে উঠল আতঙ্কের ছাপ, সঙ্গে ফিরে এল বালাকোট হামলার স্মৃতি। জল্পনা আরও জোরদার হয়, প্রায় গোটা রাত করাচির বহু অংশ নিষ্প্রদীপ থাকায়। তবে মঙ্গলবার রাতে করাচির আকাশে ঠিক কী হয়েছিল তা নিয়ে বুধবার রাত পর্যন্ত পাকিস্তান বা ভারত কোনও পক্ষেরই সরকারি কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Advertisement

মঙ্গলবার গভীর রাতে করাচি থেকে আচমকাই টুইটারে একের পর এক পোস্ট হতে শুরু করে। সেখানকার বাসিন্দারা টুইটে দাবি করেন, ভারতীয় যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঘোরাফেরা করছে। মঙ্গলবার রাত দেড়টার সময় ‘ফ্রন্টাল অ্যাসল্ট’ নামে একটি টুইটার হ্যান্ডল থেকে ব্রেকিং নিউজ পোস্ট করা হয়। সেই পোস্টে লেখা হয়, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে খবর, করাচির আকাশের খুব কাছে ঘোরাফেরা করছে একাধিক ভারতীয় ফাইটার জেট। সেখানে ‘ব্ল্যাকআউট’ (সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া) করে দেওয়া হয়েছে। আতঙ্ক গ্রাস করেছে পাকিস্তানের দক্ষিণাংশের বিস্তীর্ণ এলাকায়। অনেকেই বলছেন, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মতো অবস্থা (বালাকোট সার্জিকাল স্ট্রাইক পরবর্তী সময়)।”

এই টুইটার হ্যান্ডল থেকে নিয়মিত ভারত-পাক সীমান্ত সংঘর্ষ থেকে শুরু করে কাশ্মীর সংক্রান্ত বিভিন্ন খবরও টুইট করা হয়। ইতিমধ্যে পাকিস্তানের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ওয়াজাহাত কাজমি নামে করাচির এক সাংবাদিক তাঁর ভেরিফায়েড টুইটার হ্যান্ডল থেকে টুইট করেন, ‘‘২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯-এর পর বোধহয় আমি এত পাক যুদ্ধবিমানকে আকাশে টহল দিতে দেখছি। আশা করি বড় কিছু হচ্ছে না বা হতে চলেছে।” সেই ওয়াজাহাত এ দিন বিকেল পৌনে সাতটা নাগাদ ফের টুইট করে দাবি করেছেন, ‘‘ভারতীয় বিমান বাহিনীর চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে পাক বিমান বাহিনী। ভারতীয় যুদ্ধবিমান সীমান্ত পেরোতে পারেনি।”

Advertisement

এ রকম বেশ কিছু টুইট করা হয়েছে করাচি থেকে।

আরও পড়ুন: দাপট হারাচ্ছেন ইমরান, পাকিস্তানে ফের জাঁকিয়ে বসছে সেনা আধিপত্য!​

মঙ্গলবার রাতেই ফয়জল ইকবাল নামে করাচির এক ক্রিকেট কোচ তাঁর ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করেছেন, ‘‘করাচির আকাশে টহল দিচ্ছে পাক বিমান বাহিনীর ফাইটার। আশা করি ফের ভারতীয় বিমান বাহিনী আমাদের আকাশে ঢোকার ব্যর্থ প্রচেষ্টা বা স্পর্ধা দেখাচ্ছে না।”

ওয়াজ খান নামে অন্য এক নামী পাকিস্তানি সাংবাদিক নিউইয়র্ক থেকে টুইট করেছেন, ‘‘জল্পনা জোরালো হচ্ছে যে, ভারতীয় বিমান বহর পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং সিন্ধ-রাজস্থান সেক্টর দিয়ে পাক আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে। ”

ওয়াজ খানের টুইট।

মঙ্গলবার রাত থেকেই এ রকম হাজার হাজার টুইট পোস্ট হতে থাকে এবং বাড়তে থাকে বালাকোট-২ এর মতো সার্জিকাল স্ট্রাইকের জল্পনা। সেই জল্পনা আরও উস্কে দেয় করাচির কিছু বাসিন্দার টুইট যেখানে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত করাচির অনেক অংশে বিদ্যুৎ ছিল না। দাবি করা হয় করাচির মসরুরে বিমানঘাঁটির আশেপাশে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগও।

আরও পড়ুন: সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তৎপর দুপক্ষই, জানাল চিন​

বুধবার ভোর রাত থেকেই টুইটারে নতুন ট্রেন্ড শুরু হয় #করাচিব্ল্যাকআউট। হাজার হাজার টুইট হতে থাকে এ বিষয়ে জল্পনা বাড়িয়ে। কিন্তু বুধবার রাত পর্যন্ত এ বিষয়ে পাক সেনা বা ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ভারতীয় বিমান বাহিনী বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এমন কিছু প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি, যাতে মনে হয়, গোটা খবরটাই ভিত্তিহীন। একই অবস্থান পাকিস্তানেরও। তাঁরাও গোটা বিষয়টি নিয়ে নীরব।

নয়াদিল্লির প্রতিরক্ষা বিষয়ক খবর করেন এমন কয়েক জন সাংবাদিকের দাবি, পাক বিমানবাহিনী দেখেই ভয় পেয়েছেন করাচির বাসিন্দারা। কিন্তু হঠাৎ করে মঙ্গলবার রাতে পাক বিমান বহর সক্রিয় হয়ে উঠল কেন? তা নিয়ে অবশ্য ব্যাখ্যা মেলেনি সাউথ ব্লক থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন