মূলতানে আক্রমণাত্মক বিলাবল ভুট্টো। পাশে গিলানি ও রাজা পারভেজ আশরাফ। ছবি: এএফপি।
কাশ্মীর ঠিক পুনরুদ্ধার করে আনবেন তিনি, গত কাল মূলতানে এক সমাবেশে গিয়ে এমনটাই দাবি করেন বিলাবল ভুট্টো। স্বাভাবিক ভাবেই, বেনজির ভুট্টো-র পুত্র তথা পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র তরুণ নেতার এ হেন হুঙ্কারে বিতর্কের ঝড় উঠতে বিশেষ সময় লাগেনি। দিল্লি অবশ্য বিলাবলের বার্তাকে স্রেফ ‘বাচ্চাদের মতো কথা’ বলেই উড়িয়ে দিয়েছে।
যদিও তাতে বিতর্ক থামেনি এতটুকু। গত সোমবারই ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হাফিজ সৈয়দকে ক্লিন চিট দিয়েছে পাকিস্তান। জানিয়েছে, হাফিজ সে দেশের স্বাধীন নাগরিক। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। এই ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় কাশ্মীর নিয়ে বিলাবলের এমন বিস্ফোরক মন্তব্যকে মুখে ‘শিশুসুলভ’ বললেও, মোটেই ভাল চোখে দেখেনি দিল্লি। বিলাবল কাল বলেন, “পুরো কাশ্মীরকে আমি ফিরিয়ে আনব। এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না। কারণ অন্য সব প্রদেশের মতো কাশ্মীরও পাকিস্তানেরই অংশ...।” এ সময় আবার তাঁর পাশে হাজির ছিলেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি ও রাজা পারভেজ আশরাফ। বিষয়টিকে হাল্কা ভাবে না নেওয়ার এটাও একটা কারণ।
তবে অনেকেরই মতে এটা আসলে পাক-রাজনীতির অংশ। ২০১৮ সালে পাকিস্তানে নির্বাচন। ভোটে দাঁড়ানোর কথা রয়েছে বিলাবলের। এখন থেকেই তার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন বেনজির-পুত্র। আর পাকিস্তানে ভোট মানেই কাশ্মীর একটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রচারের আলোয় আসতেই এ হেন ‘শিশুসুলভ’ মন্তব্য করে ফেলেছেন বিলাবল। বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভি যেমন বলেছেন, “পাক-রাজনীতিতে কাশ্মীর প্রসঙ্গ প্যারাশুটের মতো।” তবে আর এক বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর কথায়, “একেবারেই অপরিণত মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে বিলাবল। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই বলেই এ হেন মন্তব্য করে বসেছেন তিনি।” তাঁর আরও মন্তব্য, “ওই পরিবারের ছেলে বলেই পিপিপি-প্রধানের পদে জায়গা পেয়েছেন। না হলে বিলাবলের কোনও যোগ্যতাই নেই।”
দলের পাশাপাশি প্রায় একই সুরে আক্রমণ করেছে বিদেশ মন্ত্রকও। আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেন, “আমরা সব সময়ই বলি কাশ্মীর-সমস্যা নিয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে দেশের সীমান্তই বদলে যাবে। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছি। এ দেশ ভাঙবে না।” তাঁর কথায়, “বাস্তবের সঙ্গে ওঁর কথার কোনও মিলই নেই। অবান্তর কথা বলছেন বিলাবল।”