২৫ বছর পরে ডিএনএ নমুনায় খুনের কিনারা

১৯৯৩ সালের এপ্রিলে আলাস্কার ছোট্ট শহর পিটকাস পয়েন্টের এক মেসবাড়িতে সোফির দেহটা উদ্ধার করেছিল পুলিশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২৬
Share:

সোফি সের্গি

বাথটবে পড়েছিল সোফি সের্গির ক্ষতবিক্ষত দেহটা। গায়ে জামা নেই, প্যান্ট খোলা, কপালে কোপানোর ক্ষত, আর মাথার পিছনে গুলির ঘা।

Advertisement

১৯৯৩ সালের এপ্রিলে আলাস্কার ছোট্ট শহর পিটকাস পয়েন্টের এক মেসবাড়িতে সোফির দেহটা উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ময়না-তদন্তে জানা যায়, যৌন নির্যাতনের পরে খুন করা হয়েছে বছর কুড়ির মেয়েটিকে। ঘটনাস্থল থেকে অপরাধীর ডিএনএ-র নমুনা মিললেও তখন আলাস্কায় ডিএনএ-ম্যাচিংয়ের মতো আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না। ফলে অধরাই থেকে যায় অপরাধী। আশা এক রকম ছেড়েই দিয়েছিলেন সোফির বাবা-মা। তবে হাল ছাড়েনি আলাস্কা পুলিশ। ইন্টারনেটের জমানায় তন্নতন্ন করে খুঁজতে খুঁজতে সম্প্রতি এক মহিলার ডিএনএ-র সঙ্গে মিলে যায় অপরাধীর ডিএনএ-র নকশা। আর তাতেই কেল্লা ফতে! সেই সূত্র ধরে খোঁজ মেলে ওই মহিলার আত্মীয়, ৪৪ বছরের স্টিভেন ডাউনের। পেশায় নার্স স্টিভেন অবার্নের মেইনের বাসিন্দা। আইনের চোখে অপরাধী স্টিভেন আপাতত স্থানীয় পুলিশের হেফাজতে। সেখানের আদালতে শুনানি শেষ হলেই তাকে আলাস্কায় প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভাবা হবে বলে জানিয়েছে মেইনের পুলিশ।

সে দিনের ঘটনা পুলিশকে জানিয়েছিলেন সোফির বন্ধু শার্লি ওয়াসুলি। আলাস্কা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সোফি ফেয়ারব্যাঙ্কসে থাকতেন। জীববিজ্ঞানী হতে চেয়েছিলেন। সে বছর এপ্রিলে দাঁতের ডাক্তার দেখাতে পিটকাস পয়েন্টে বন্ধু শার্লির কাছে গিয়েছিলেন সোফি। একটি মেসবাড়ির একতলায় পুরুষসঙ্গীর সঙ্গে থাকতেন শার্লি। সোফির জন্য তিনতলার একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। খুন হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তোলা একটি ছবিতে সোফিকে সে দিন ঝলমলে দেখাচ্ছিল। গায়ে সেই জ্যাকেট, আনন্দে দু’হাত ছড়িয়ে লাফাচ্ছেন তরুণী। শার্লি বললেন, ‘‘রাত পর্যন্ত হইহই করছিলাম। দেড়টা নাগাদ সোফি বাইরে সিগারেট খেতে গিয়েছিল। অনেক ক্ষণ পরেও ফিরছে না দেখে ওর ঘরের দরজায় একটা চিরকুট লিখে আমি শুতে চলে যাই। পর দিন সকালে দেখি চিরকুটটি একই ভাবে ঝুলছে। জানতে পারলাম, সোফি ডাক্তারের কাছেও যায়নি।’’ সে দিনই তিনতলার শৌচাগার থেকে সোফির দেহ মেলে। ওই মেসবাড়ির এক তলায় থাকত স্টিভেন। সব বাসিন্দার সঙ্গে সে দিন স্টিভেনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। তবে এ বিষয় কিছুই জানে না বলে পুলিশের চোখে ধুলো দেয় সে। আর অপরাধীর ডিএনএ নমুনা হাতে থাকা সত্ত্বেও প্রযুক্তির অভাবে সে দিন খুনের কিনারা হয়নি।

Advertisement

হাল ছাড়েনি পুলিশ। আজকাল অনেকেই দূরের আত্মীয়ের খবর পেতে ইন্টারনেটে ডিএনএ নকশা নথিভুক্ত করেন। এমনই একটি ডেটাবেস থেকে এক মহিলার খোঁজ মেলে। অপরাধীর সঙ্গে মিলে যায় তাঁর ডিএনএ। সেই সূত্রেই খোঁজ মিলল স্টিভেনের। পর্দা উঠল ২৫ বছর পুরনো হত্যা রহস্যের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন