পরকীয়া অপরাধ নয়। ঐতিহাসিক রায় দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তবে অপরাধ না হলেও বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হতে পারে পরকীয়া। পরকীয়া নিয়ে বহু পুরনো আইন আসলে নারীর স্বাতন্ত্রকে খর্ব করে বলে জানিয়েছেন চিফ জাস্টিস দীপক মিশ্র। কিন্তু অন্য দেশগুলি কী বলছে পরকীয়া নিয়ে? কী আইনই বা রয়েছে সেই দেশগুলিতে, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
ফিলিপিন্স- ফিলিপিন্সে পরকীয়া এখনও অপরাধ। স্ত্রী আর তাঁর সঙ্গীর ৬ বছর অবধি জেল হতে পারে, যদি তাঁর স্বামী প্রমাণ করতে পারেন যে, ওই পার্টনারের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রয়েছে তাঁর স্ত্রীর। অন্য দিকে আবার স্বামীর অন্য কোনও মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক যদি স্ত্রী প্রমাণ করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে স্বামীর এক দিন থেকে ৪ বছর অবধি জেল হতে পারে।
চিন- চিনে পরকীয়া অপরাধ নয়। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। চিনে বিবাহ আইনের ৪৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী, স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এ ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের দাবি করতে পারেন।
সৌদি আরব- সৌদি আরব এবং সোমালিয়ার মতো ইসলামিক দেশগুলিতে পরকীয়াকে বিরাট অপরাধের চোখে দেখা হয়। স্বামী বা স্ত্রী যে কারও অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা, নির্বিচার আটক, জেল, মারধর এমনকি মৃত্যদণ্ড অবধি হতে পারে।
পাকিস্তান- ১৯৭৯ সালের হুদুদ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী পাকিস্তান পরকীয়াকে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে। তবে এ ক্ষেত্রে মহিলাদের শাস্তির পরিমাণ বেশি।
দক্ষিণ কোরিয়া- ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়াও জানিয়ে দিয়েছিল যে, পরকীয়া অপরাধ নয়। ৯ জন বিচারকের বেঞ্চ ১৯৫৩ সালের পরকীয়া সংক্রান্ত পুরনো আইনটিকে বাতিল করে দেয়। সেই আইনে স্বামী বা স্ত্রী দোষী প্রমাণিত হলে তিন বছর অবধি জেল হত।
তাইওয়ান- পরকীয়া বরাবরই অপরাধ তাইওয়ানে। পরকীয়ার অপরাধে স্বামী বা স্ত্রী যে কেউ ধরা পড়লে এক বছরের জেল হয়। তাইওয়ানের এক জেন্ডার ইকুয়ালিস্টের কথায়, ‘‘তাইওয়ানিজ পুরুষরা ধরা পড়লে তাঁরা সাধারণত স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইত। যেহেতু তাঁরা রোজগেরে তাই স্ত্রীরা মামলা বন্ধ করে দিতেন। কিন্তু এমন ঘটনা মহিলাদের সঙ্গে ঘটলে তাঁদের আদালত অবধি ছুটতেই হত।’’
আরও কিছু দেশ- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০ টি রাজ্যে পরকীয়া এখনও অপরাধ। তবে জরিমানার বেশি খুব একটা শাস্তি হয় না। ইউরোপিয়ান দেশগুলিতে আর অস্ট্রেলিয়াতে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক অপরাধের নয়।