পাক সেনার হামলায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া একটি গাড়ির পাশে স্থানীয়রা। মঙ্গলবার আফগানিস্তানে। ছবি: রয়টার্স।
আকাশপথে আফগানিস্তানে হামলা চালাল পাকিস্তান। এই হামলায় নয় শিশু-সহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে তালিবান সরকার। মঙ্গলবার তালিবান সরকারের মুখপাত্র জ়বিউল্লাহ মুজাহিদ জানান, সোমবার মধ্যরাতে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী রাত সাড়ে ১২টা) আফগানিস্তানের খোস্ত প্রদেশের গুরবুজ় জেলায় হামলা চালায় পাক সেনা।
আফগানিস্তানের অভিযোগ, পাক সেনা কোনও সামরিক কাঠামোয় আঘাত না-হেনে নিরীহ মানুষের বা়ড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছুড়েছে। এমনই একটি বোমার আঘাতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কাবুল। মৃতদের মধ্যে ন’জনই শিশু। এক জন মহিলা। যে বাড়িতে বোমা ফেলা হয়, সেটিও পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
আফগানিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে কুনার এবং পূর্ব পাকটিকা প্রদেশেও পাকিস্তান আকাশপথে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে আফগানিস্তান। সেই হামলায় অন্তত চার জন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তালিবান সরকারের মুখপাত্র।
সম্প্রতি আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পাকিস্তানের বিমান হামলা এবং তার পরবর্তী সময়ে তালিবান সরকারের জবাব দুই দেশের সীমান্তকে উত্তপ্ত করে তুলেছিল। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। তবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনও তলানিতে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার পাকিস্তানের পেশোয়ারে সে দেশের আধা সামরিক বাহিনী ‘ফেডেরাল কনস্ট্যাবুলারি’-র সদর দফতরে হামলা চালায় তিন জন বন্দুকবাজ। কোনও সংগঠনের তরফে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার দায় স্বীকার করা হয়নি। তবে ওই হামলার নেপথ্যে ‘আফগানিস্তানের মদতপুষ্ট’ তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা পাক তালিবান রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের সংবাদপত্র ‘ডন’ সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, আধা সেনার দফতরে হামলার পরেই এক পাক কূটনীতিক আফগানিস্তানের এক প্রাদেশিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের নির্যাস কী জানা যায়নি। তবে সেই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পরেই আফগানিস্তানে হামলা চালাল পাক সেনা। সোমবারের হামলার ‘জবাব’ দিতেই পাকিস্তানের এই পদক্ষেপ কি না, তা-ও এখনও স্পষ্ট নয়।