জেমস জোসেফ ড্রেসনক। ছবি: এএফপি।
পাঁচ দশক আগে যুদ্ধের সময় উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর প্রতি আনুগত্য দেখিয়েছিলেন তিনি। কিম জং উনের দেশে গত বছর মারা গিয়েছেন মার্কিন সেনাবাহিনীর সেই একমাত্র সদস্য, জেমস জোসেফ ড্রেসনক। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪। তাঁর দুই ছেলে এই খবর জানিয়েছেন কোরীয় টিভি চ্যানেলে।
শুধু ড্রেসনক নন, ওই সময় আরও গুটিকয় মার্কিন সেনা উত্তর কোরিয়ার শাসকের প্রতি আনুগত্য দেখান। ১৯৫০-৫৩ সালের মধ্যে কোরীয় যুদ্ধ শেষ হওয়ার বছর দশেকের মাথায় ‘সুরক্ষিত সামরিক বাহিনীমুক্ত এলাকা’ পেরিয়ে উত্তর কোরিয়ার দিকেই ঝোঁকেন ড্রেসনকের মতো কয়েক জন। গত বছর পর্যন্ত বেঁচেছিলেন শুধু ড্রেসনক। উত্তর কোরিয়ায় মার্কিন সেনার শেষ প্রতিনিধি মনে করা হতো তাঁকেই।
সরকার চালিত এক ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকারে টেড এবং জেমস (ছোট এই পুত্রের নামও বাবার নামেই)জানান, গত বছর নভেম্বরে স্ট্রোকে মারা গিয়েছেন বাবা। টেড বলেছেন, ‘‘বাবা এই দেশ থেকে অনেক ভালবাসা পেয়েছেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তা অটুট ছিল।’’ ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, ড্রেসনকের দুই পুত্রের পরনে কোরিয়ান পিপলস আর্মির উর্দি। তাতে উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সাঙের ছবিওলা ব্যাজ সাঁটা। যা থেকে স্পষ্ট, কিম-আনুগত্যে ঘাটতি নেই তাঁদেরও। জন্ম উত্তর কোরিয়াতেই। মা, ডোয়িনা বুমবে রোমানিয়ার মহিলা। ড্রেসনকের সঙ্গে অবশ্য পরে তাঁর বিচ্ছেদ হয়। ডোয়িনার পরিবারের দাবি, পিয়ংইয়ং তাঁদের মেয়েকে অপহরণ করেছিল। ২০১৪ সালে উত্তর কোরিয়া নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার রিপোর্টে আছে, ‘‘ইউরোপ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া থেকে তখন মহিলাদের এনে উত্তর কোরিয়ার বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে বিয়েতে বাধ্য করা হতো। মনে করা হতো, বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে কোরীয় মহিলার বিয়ে হলে ‘বিশুদ্ধ’ কোরীয় সন্তান জন্মাবে না!’’
সোলের সংবাদমাধ্যম বলছে, দু’ভাইয়ের কথায় স্পষ্ট, তাঁরাও বিদেশিদের সামনে ‘সরকারের শেখানো বুলি’ আওড়াতে অভ্যস্ত। তাঁদের কথায় পিয়ংইয়ং-ওয়াশিংটন দ্বন্দ্বও উঠে এসেছে। টেডের হুঁশিয়ারি, ‘‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা যুদ্ধের উন্মাদনা তৈরি করছে।’’ তাঁর দাবি, উত্তর কোরিয়ার সেনা সম্পর্কে আমেরিকার কোনও ধারণাই নেই।