Shanghai Cooperation Organisation

মোদী-শি বৈঠক হবে তো? ধন্দ

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বেশ কয়েক দিন ধরেই বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে কথা চলছিল বেজিংয়ের। গোগরা ও হট স্প্রিং (পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫) থেকে সেনা পিছিয়ে নেওয়ার উদ্যোগটি সেই আলোচনারই ফসল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৫:৩৩
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা। ফাইল চিত্র।

তিন বছর পর উজ়বেকিস্তানে মুখোমুখি বসছেন শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-ভুক্ত রাষ্ট্রনেতারা। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক শেষ পর্যন্ত হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ বেড়েই চলেছে।

Advertisement

ভারতে তো বটেই, আন্তর্জাতিক শিবিরেও তীব্র কৌতূহল রয়েছে এই বৈঠকের সম্ভাবনা ঘিরে। কিন্তু বৈঠকটি আদৌ হবে কি না, তা প্রধানমন্ত্রী সমরখন্দের উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময়েও স্পষ্ট করেনি বিদেশ মন্ত্রক। এমনকি এ দিন রাতে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে মোদীর আগামী কালের যে কর্ম-সূচি প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে অন্তত শি-এর সঙ্গে বৈঠকের কথা নেই। তদুপরি, মোদী এ দিন সমরখন্দের উদ্দেশে রওনা হন পূর্বনির্ধারিত সময়ের অনেক পরে। রাত ন’টার পরে সমরখন্দ পৌঁছেছেন তিনি। কূটনৈতিক মহলে জল্পনা, এসসিও সম্মেলনের সূচনা অনুষ্ঠানে একাধারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা এড়াতেই এই পরিকল্পিত বিলম্ব।

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বেশ কয়েক দিন ধরেই বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে কথা চলছিল বেজিংয়ের। গোগরা ও হট স্প্রিং (পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫) থেকে সেনা পিছিয়ে নেওয়ার উদ্যোগটি সেই আলোচনারই ফসল। দিল্লির সাফ বক্তব্য ছিল, দু’দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হলে (তা পার্শ্ববৈঠক হলেও) ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সেখান থেকে খালি হাতে ফেরা সম্ভব নয়। সামনে একাধিক বিধানসভা ভোট রয়েছে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের নিরিখেও চিনের জট ছাড়ানো বিজেপির পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভারতের কূটনৈতিক কর্তারা চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন চিনা সেনা পিছোনোর আরও প্রতিশ্রুতি আদায় করতে। সে কারণেই ভারত-চিন পার্শ্ববৈঠকের সম্ভাবনা সম্পর্কে নীরব থেকে গিয়েছিল সাউথ ব্লক। যদি দেখা যায়, কোনও ভাবেই চিনা নেতৃত্বকে নরম করানো যাচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে হয়তো বৈঠকে বসবেনই না মোদী, এমনটা স্থির করাই ছিল।

Advertisement

আজ বারবার এই বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিশেষ সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশসচিব বিনয় কোয়াত্রা জানান, আয়োজক দেশ উজ়বেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এবং আরও কিছু রাষ্ট্রনেতার (এসসিও-ভুক্ত) সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক পার্শ্ববৈঠক হবে। ঘটনাপ্রবাহ যেমন গড়াবে, সেই ভাবে অন্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলির কথা জানানো হবে।

বিদেশনীতির প্রশ্নে নতুন কিছু করে দেখাতে উদ্যোগী মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই ২০১৪ সালে সাবরমতীর কাছে দোলনায় দুলেছিলেন শি-এর সঙ্গে। ২০১৮ সালে উহানের মনোরম হৃদের ধারে পায়চারি করেছিলেন দু’জনে। আর তার আট মাস আগে প্রাচীন মমল্লপুরমের নদীবক্ষে মোদী এবং শি-র কথোপকথন হয়েছিল। কিন্তু এত করেও গালওয়ান কাণ্ড ঠেকানো যায়নি। প্রায় আড়াই বছর হতে চলল, পূর্ব লাদাখে থাবা গেড়ে বসে রয়েছে লাল সেনা। সম্প্রতি লাদাখের গোগরা ও হট স্প্রিং (পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৫) থেকে সেনা পিছিয়ে নিয়েছে দু’পক্ষই। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, চিনা সেনাকে হঠাতে গিয়ে ভারত আসলে নিজের সীমান্ত থেকেই পিছিয়ে এসেছে। এখনও ডেপশাং চকের একাধিক পয়েন্টে চিনা সেনা রয়েছে বলে অভিযোগ। বলা হচ্ছে, চিনের দখলে রয়েছে ১০০০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন