বিমানের পর এ বার বাসে। বিদেশের মাটিতে শিখদের হেনস্থার তালিকা দিনে দিনে বাড়ছে।
পাগড়ি পরার ‘অপরাধে’ এ বার হেনস্থার শিকার হলো ১৩ বছরের এক কিশোর। নাম হরজিৎ সিংহ। সম্প্রতি মেলবোর্নে স্কুলে যাওয়ার পথে বাসের মধ্যে প্রকাশ্যেই তাকে খুনের হুমকি দেয় তিন জনের একটি দল। হরজিৎ জানিয়েছে, ওই দলে একটি মেয়েও ছিল। অভিযুক্তদের খুঁজছে পুলিশ।
চলতি বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে একই কারণ দেখিয়ে মেক্সিকো সিটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীরা বিমানে উঠতে বাধা দেয় ওয়ারিশ অহলুওয়ালিয়া (৪১) নামে এক শিখ অভিনেতাকে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিমানকর্মীদের মধ্যে ধর্মীয় সচেতনতা বাড়ানোর দাবি জানান তিনি। বিদেশের মাটিতে শিখদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষের ঘটনা এই প্রথম নয়। গত ডিসেম্বর মাসে ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন নিরাপত্তাকর্মীরা পাগড়ি পরা শিখ তরুণদের মাঠে ঢুকতে বাধা দেন। তাদের মধ্যে বীরেন্দ্র মালহি নামে এক জন জানান, দাড়ি আর পাগড়ি দেখে অনেকেই শিখদের সন্ত্রাসবাদী ভেবে ভুল করেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে শিকাগো শহরে ওসামা বিন লাদেন বলে চূড়ান্ত ব্যঙ্গ ও হেনস্থার মুখে পড়েন এক ব্যক্তি। নিউ ইয়র্কে অন্য একটি ঘটনায় পাগড়ির কারণে সন্ত্রাসবাদী সন্দেহে সন্দীপ সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে রীতিমতো তাড়া করে আক্রমণ করা হয়। ধর্মীয় বিদ্বেষের কারণেই বিদেশে বার বার বন্দুকবাজদের হামলার নিশানা হয়েছে গুরুদ্বার। ক্রমশ নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। হরজিতের উপর এই আক্রমণ শিখদের উপর ধর্মীয় বিদ্বেষেরই প্রকাশ বলে মনে করছেন তার মা রাজেন্দ্র কউর গিল।
সে দিনের ঘটনায় এখনও আতঙ্কিত হরজিত। সে জানায়, বাসের পিছনের আসনে বসে তিন জনের ওই দলটি এক নাগাড়ে তার পাগড়ি নিয়ে ব্যঙ্গ করে যাচ্ছিল। আসন পরিবর্তন করেও তাদের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়নি। অভিযোগ, প্রতিবাদ জানালে হরজিতকে ধাক্কা মেরে তার পাগড়ি খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। হুমকি আর অপমানের জ্বালায় শেষ পর্যন্ত মাঝ রাস্তাতেই বাস থেকে নেমে যেতে বাধ্য হয় হরজিত।
এই ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে হরজিত ও তার পরিবার। ঘটনার তদন্ত করে অপরাধীদের গ্রেফতার করার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।