ব্রিটেনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শাসক-বিরোধীর

বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির মসনদে কে বসবে? ভোটবাক্সে আজ সেই প্রশ্নের জবাব দিল ব্রিটেন। প্রতিটি জনমত সমীক্ষাই বলছে, এক দশকে এই প্রথম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে শাসক-বিরোধীর। ব্রিটেনের ৫৬তম সাধারণ নির্বাচনের ফল ত্রিশঙ্কু হবে বলেও পূর্বাভাস বিশেষজ্ঞদের। এ বার ভোটে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী শাসক দল কনজারভেটিভ এবং প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির পাশাপাশি উঠে এসেছে উগ্র জাতীয়তাবাদী ইউকেআইপি-র নামও। সমীক্ষা বলছে মোট ভোটের ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশ এ বারও থাকবে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর দখলেই।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৫ ০৩:০৫
Share:

স্পেল্সবেরির একটি ভোটকেন্দ্র থেকে ভোট দিয়ে বেরোচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। পাশে স্ত্রী সামান্থা। বৃহস্পতিবার। ছবি: এপি।

বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির মসনদে কে বসবে? ভোটবাক্সে আজ সেই প্রশ্নের জবাব দিল ব্রিটেন।

Advertisement

প্রতিটি জনমত সমীক্ষাই বলছে, এক দশকে এই প্রথম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে শাসক-বিরোধীর। ব্রিটেনের ৫৬তম সাধারণ নির্বাচনের ফল ত্রিশঙ্কু হবে বলেও পূর্বাভাস বিশেষজ্ঞদের। এ বার ভোটে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী শাসক দল কনজারভেটিভ এবং প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির পাশাপাশি উঠে এসেছে উগ্র জাতীয়তাবাদী ইউকেআইপি-র নামও। সমীক্ষা বলছে মোট ভোটের ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশ এ বারও থাকবে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর দখলেই।

লিবারাল ডেমোক্র্যাটরা দীর্ঘদিন ব্রিটেনে তৃতীয় প্রধান দলের জায়গায় থাকলেও এ বারের সমীক্ষায় তাদের পিছনে ফেলেছে ইউকেআইপি! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় ভূমিকা পালন করবে স্কটল্যান্ডের জাতীয়তাবাদী দল এসএনপি (স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি), ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ গ্রিন পার্টিও। সমীক্ষা বলছে, কনজারভেটিভদের ১২ শতাংশ ভোট কাড়বে ইউকেআইপি। একই ভাবে স্কটল্যান্ডে লেবার পার্টির ভোট কেটে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে পারে এসএনপি। আসন ধরে রাখতে মরিয়া লিবারাল ডেমোক্র্যাটরাও।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে ত্রিশঙ্কু পার্লামেন্টের সম্ভাবনাই দেখছেন বিশেষজ্ঞেরা। গত এক দশকে এমন অনিশ্চিত ভোট ব্রিটেন দেখেনি বলেও দাবি তাঁদের। প্রতিটি সমীক্ষাই বলেছে পার্লামেন্টের ৬৫০টি আসনে শাসক দলের একাধিপত্যে ভাগ বসাবে লেবার পার্টি। তবে বিরোধীদের জেতার সম্ভাবনার কথা উড়িয়েই দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। লেবার পার্টির সঙ্গে এসএনপি-র করমর্দন হলে তা যে কনজারভেটিভদের জন্য চিন্তার কারণ হবে, সেই ইঙ্গিতও মিলেছে সমীক্ষায়। ক্যামেরনের মতে, ‘‘একমাত্র কনজারভেটিভরা স্থায়ী সরকার তৈরি করতে পারে। বাকিরা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে।’’ আর মিলিব্যান্ডের কথায়, ‘‘এটাই এখনও পর্যন্ত কঠিনতম লড়াই হতে চলেছে।’’ সকাল ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে ভোট দেন মিলিব্যান্ড। সকাল সকাল ভোট দেন ইউকেআইপি-র নাইজেল ফারাজ, এসএনপি-র নিকোলা স্টারগন। স্ত্রী জাস্টিনের হাত ধরে ভোট দিতে যাওয়ার সময় মিলিব্যান্ডকে এ দিন বেশ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত দেখিয়েছে। ভোটারদের সঙ্গে তিনি বিশেষ কথাও বলেননি। তবে পূর্ব গ্লাসগোর বুথে স্বামী পিটার মিউরেলের সঙ্গে ভোট দিতে গিয়ে স্বতঃস্ফুর্তই ছিলেন নিকোলা। হাসি-ঠাট্টা করে চিত্রসাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে পোজও দিয়েছেন। স্ত্রীর সঙ্গে ভোট দিতে আসেন ক্যামেরনও।

প্রচারে শেষ মুহূর্তে ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন ক্যামেরন। প্রধানমন্ত্রীর আর্জি, ‘‘অর্থনীতিকে যদি ধ্বংস হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে চান, যদি চান আমি শুক্রবার আপনাদের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করি— কনজারভেটিভদের ভোট দিন।’’ শাসক-বিরোধী দু’পক্ষই এ বারের ভোট প্রচারে সমান গুরুত্ব দিয়েছেন প্রবাসী ভারতীয়দের। লড়াইয়ে রয়েছেন বেশ কয়েকজন ভারতীয়ও। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ইনফোসিসের চেয়ারম্যান নারায়ণ মূর্তির জামাই ঋষি সুনক। শেখ হাসিনার বোনঝি টিউলিপ সিদ্দিক জয়ী হলে ‘হাউস অব কমনসে’ বাঙালি এমপি-র সংখ্যা এক থেকে বেড়ে দাঁড়াবে দুইয়ে। এখন একমাত্র বাঙালি এমপি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রোশেনারা আলি। জিতলে প্রথম তামিল এমপি হিসেবে ইতিহাসে নাম উঠবে উমা কুমারনেরও।

অপেক্ষা কাল দুপুর পর্যন্ত। তখনই জানা যাবে, ক্ষমতা কার হাতে যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন