Internatiuonal News

‘চাপে নয়, রিলায়্যান্সকে বেছেছি আমরাই’, মোদীকে স্বস্তি দিয়ে দাবি দাসো সিইও-র

ট্রেপিয়ার বলেছেন, ‘‘রিলায়্যান্স ছাড়াও আরও ৩০টি সংস্থা দাসোর পার্টনার। আমরা নিজেরাই রিলায়্যান্সকে বেছে নিয়েছি।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মার্সেলি শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ১৩:৩২
Share:

রাফাল চুক্তি নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন দাসোর সিইও এরিক ট্রেপিয়ার। ছবি: এএনআই-এর টুইটার থেকে নেওয়া

রাহুল গাঁধী-সহ বিরোধীদের লাগাতার তোপের মুখে রাফাল ইস্যুতে মোদী সরকারকে কিছুটা স্বস্তি দিল দাসো এভিয়েশন। অবশেষে রাফাল চুক্তি নিয়ে মুখ খুলল ওই ফরাসি প্রতিরক্ষা সামগ্রী প্রস্তুতকারী সংস্থা।

Advertisement

সংস্থার সিইও এরিক ট্রেপিয়ার জানিয়ে দিলেন, কারও চাপে নয়, দাসো কর্তৃপক্ষ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে অনিল অম্বানীর সংস্থা রিলায়্যান্স ডিফেন্সকে ‘অফসেট পার্টনার’ হিসাবে বেছে নিয়েছিল। শুধু তাই নয়, নাম না করে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদেরও এক হাত নিয়েছেন ট্রেপিয়ার।

সংস্থার ইস্ট্রেস লে টিউবএয়ার বেস-এ সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রেপিয়ার বলেছেন, ‘‘রিলায়্যান্স ছাড়াও আরও ৩০টি সংস্থা দাসোর পার্টনার। আমরা নিজেরাই রিলায়্যান্সকে বেছে নিয়েছি।’’ রাহুল গাঁধী বারবার অভিযোগ করেছেন, দাসাে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। সত্য প্রকাশ্যে আনছে না। এ নিয়ে দাসো সিইও-র খোঁচা, ‘‘আমি মিথ্যা বলি না। সংস্থার হয়ে আগেও যে সব বিবৃতি দিয়েছি, তা সম্পূর্ণ সত্য। মিথ্যা বলার ‘সুনাম’ আমার নেই। আর সিইও-রমতো একটা পদে থেকে আপনি মিথ্যা কথা বলতেও পারবেন না।’’

Advertisement

ইউপিএ জমানার চুক্তির প্রায় দ্বিগুণ দামে মোদী সরকার রাফাল জেট কিনছে বলে অভিযোগ তুলছিলেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু ট্রেপিয়ারের দাবি, দ্বিগুণ নয়, রিলায়্যান্সের সঙ্গে বরং আরও কম দামে চুক্তি হয়েছে। ট্রেপিয়ার জানিয়েছেন, ইউপিএ জমানায় মোট ১৩৬টি জেট কেনার চুক্তি হয়েছিল। তার মধ্যে ১৮টি পুরোপুরি তৈরি করে ওড়ার মতো অবস্থায় দেওয়ার কথা ছিল। বাকি ১০৮টি তৈরি হওয়ার কথা ছিল ভারতে, হিন্দুস্তান অ্যরোনটিকস লিমিটেড-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে।

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে মৌন, সু চি-র সর্বোচ্চ মানবাধিকার পুরস্কার কেড়ে নিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

ট্রেপিয়ার বলেন, ‘‘ফ্রান্সে তৈরি হওয়া ১৮টি ‘রেডি’জেটের দামই ইউপিএ জমানার চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল। আর এখন চুক্তি হয়েছে ৩৬টি জেটের, যার সবগুলিই সম্পূর্ণ প্রস্তুত অবস্থায় সরবরাহ করার কথা। সেই কারণেই দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। যদিও সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হয়েছে এবং আমরাও বরাত পেতে চাইছিলাম, তাই দাম বরং ৯ শতাংশ কমাতে হয়েছে।’’

একটি নিউজ পোর্টালের খবরের ভিত্তিতে সম্প্রতি রাহুল নয়া অভিযোগ নিয়ে এসেছেন, বরাত পাওয়ার ‘নজরানা’ হিসাবে লোকসানে চলা ধুঁকতে থাকা অনিল অম্বানীর সংস্থাকে ২৮৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। দাসোর সিইও-র জবাব, ‘‘ভারতের সঙ্গে চুক্তির শর্তেই ছিল, মোট অঙ্কের অর্ধেক টাকা ভারতে বিনিয়োগ করতে হবে। সেই হিসাবেই ৫৯ হাজার কোটির চুক্তির জন্য প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা রিলায়্যান্সকে টাকা দিইনি। অনিল অম্বানীর সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবে ওই টাকা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ভোটের আগে মাথাপিছু টাকা ঢেলেছে বিজেপি! রাতে তাই বেদম নাচ আর মাংস-ভাত

ফ্রান্সের দাসো এভিয়েশনের সঙ্গে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকায় ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করে মোদী সরকার। চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাহুল গাঁধী প্রথম সরব হন সংসদে। তার পর থেকে রাহুল তো বটেই, বাকি বিরোধীরাও ঝাঁপিয়ে পড়ে। তার মধ্যেই চুক্তির সময়কার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ মন্তব্য করেন, ভারত সরকারের চাপেই অনিল অম্বানীর সংস্থাকে চুক্তিতে অন্তর্ভূক্ত করতে বাধ্য হয় ফ্রান্স। তাতে অভিযোগ আরও জোরালো হয়। আবার সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে মামলাও হয়েছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে রাফালের দাম-সহ চুক্তির যাবতীয় নথি জমা দিয়েছে সরকার

কিন্তু এত দিন এ নিয়ে চুপচাপই ছিল রাফালের মূল বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা দাসো এভিয়েশন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে নানা তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও সংস্থার কোনও কর্তা এ নিয়ে মুখ খোলেননি। সে দিক থেকে এই প্রথম মুখ খুললেন দাসোর শীর্ষ কর্তা। লোকসভা ভোটের আগে ট্রেপিয়ারের এই মন্তব্য ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
সারাবিশ্বের সেরা সব খবরবাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন