ডোকলাম। —ফাইল চিত্র।
ডোকলামে ভারতের সেনা ঢুকলে উত্তরাখণ্ডের কালাপানি কিংবা কাশ্মীরে চিনা সেনা ঢুকবে না কেন, সে প্রশ্ন তুলে দিল বেজিং। সেই সঙ্গে ১৯৬২-র যুদ্ধের কথা মনে করিয়ে নয়াদিল্লির উদ্দেশে বিদ্রুপ ও হুমকি ছুড়ে দিল তারা।
চিনের বিদেশ মন্ত্রকে সীমান্ত ও জলসীমা সংক্রান্ত বিষয়ের উপ নির্দেশক ওয়াং ওয়েনলি এ দিন বলেন, ভারত, চিন ও ভুটানের ত্রিদেশীয় সংযোগস্থলে ডোকলাম অবস্থিত। এই যুক্তি দিয়ে ডোকলামে সেনা পাঠিয়েছে ভারত। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ত্রিদেশীয় সংযোগস্থল অনেক রয়েছে। একই যুক্তিতে আমরা যদি চিন-ভারত-নেপালের সংযোগ স্থল কালাপানি এলাকায় ঢুকে যাই কিংবা ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে থাকা কাশ্মীরে পৌঁছে যাই, তা হলে ভারত কি করবে?’’ ওয়েনলি দাবি করেন, ডোকলামে যে এলাকায় ভারত সেনা পাঠিয়েছে, সেটিকে চিনের এলাকা বলে মেনে নিচ্ছে থিম্পুও। এই টানাপড়েনের মধ্যে এই মর্মে বার্তাও দিয়েছে তারা।
ডোকলাম সঙ্কটে ভারতের সঙ্গে চিনের যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়েও প্রশ্নের জবাব দেন চিন সরকারের মুখপাত্র। বলেন, ‘‘চিন সরকার ও সেনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ভারত যদি ভুল পথে চলে, তা হলে আন্তর্জাতিক আইন মেনে যে কোনও পদক্ষেপ করতে পারে চিন।’’
ভারতীয় সাংবাদিকদের প্রতিনিধিদলের কাছে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধির এই হুঁশিয়ারির আগেই চিনের সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এ নয়াদিল্লিকে ফের হুমকি দেওয়া হয়। এর সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘‘১৯৬২ সালের পর থেকে আজও বদলায়নি ভারত। জওহরলাল নেহেরুর সময়েও তারা যেমন শিশুসুলভ আচরণ করেছিল, আজ নরেন্দ্র মোদী জমানাতেও ভারতের সেই একই হাল।’’ কারণ, ‘‘সব দেশের সরকারই শক্তিশালী প্রতিবেশীর সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে চলে। কিন্তু ১৯৬২-র পরে এতটা সময় কেটে গেলেও দিল্লি শিক্ষা নেয়নি।’’ ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর সম্পাদকীয়র সঙ্গেই একটি ভিডিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। যেখানে পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মন্তব্য করেছেন, ‘‘চিনের হুঁশিয়ারি না শুনলে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠবে।’’
ডোকলামে প্রায় দু’মাস ধরে মুখোমুখি চিন ও ভারতের সেনা। চিনের সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’ বলছে, চিন যুদ্ধের ঝুঁকি নিতে চায় না। তবে ভারতীয় সেনা ডোকলাম-এ একই ভাবে বসে থাকতে চাইলে বিষয়টি ‘অন্য রকম’ হবে।