ব্রাজিলের সবকটি জেল। কুখ্যাত বললেও কম বলা হবে। প্রায়ই লেগে থাকে বন্দি সংঘর্ষ। মারাও গিয়েছেন কেউ কেউ। বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ স্থানে ব্রাজিলের জেলের বন্দি সংখ্যা। কিন্তু এখানকার একটি জেলই একেবারে অন্যরকম।
ব্রাজিলের জনসংখ্যাও বিশ্বের প্রথম সারিতে। বেশিরভাগ জেলের অবস্থাও সঙ্গীণ। কিন্তু ভালদেসি ফেরেইরা ভেবেছিলেন অন্যরকম।
ব্রাজিলের সংশোধনাগারের সঙ্গে যুক্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধিকর্তা ফেরেইরা। অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব অ্যাসিস্ট্যান্স টু দ্য কনভিকটেড (এপিএসি/আপাক) বেসরকারি সংস্থা যে জেলটি চালায় তারা অন্যরকম ভাবতে শুরু করে। ১৯৮০ সালে ব্রাজিলের একটি সংশোধনাগারে গিয়েই ভাবনাটি মাথায় এসেছিল ফেরেইরার। পরবর্তীতে তা বাস্তবায়িত করলেন তিনি।
এই জেলের বন্দিদের কাছেই থাকে তাঁদের সেলের চাবি। ফেরেইরা বলেন, চাবি আসলে বিশ্বাসের প্রতীক। তাই চাবি তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁদের কাছে।
রয়েছে বেসিক এডুকেশনের ব্যবস্থাও। দেওয়া হচ্ছে বেশ কিছু প্রশিক্ষণ, যাতে মুক্তি পেলেই কাজ পেতে পারেন বন্দিরা।
সংখ্যা নয়, নামে ডাকা হয় বন্দিদের। নেই কোনও দ্বাররক্ষী, নেই বন্দুকও।
শুধু ঘুমানোর সময় জেলের ঘরে ফেরেন তাঁরা। বাকি সময় কাজ, পড়াশোনা বা নিজস্ব হবি নিয়েই থাকেন বন্দিরা ।
ব্রাজিলের জেলেই ২০১৭ সালে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরের বন্দি সংঘর্ষে ৫৬ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। তারপরই এমন ভাবনা আপাকের। কুখ্যাত অপরাধীদের ডাকা হয় ‘রিকভারিং পার্সন’ হিসাবে।
ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম বলছে, এই জেলের খরচ অন্য জেলের তুলনায় প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কম।
ইচ্ছামতো খেলাধূলা বা ধর্মাচরণের অধিকারও রয়েছে এই জেলের বন্দিদের।
ফেরেইরা বলেন, আপাকের উদ্দেশ্য হল, ‘দ্য ম্যান এনটার্স, দ্য ক্রাইম স্টেস আউটসাইড।’
ব্রাজিলে এরকম আরও ৫০টি জেল এ ভাবে চলা শুরু করছে। আরও ১০০টি জেলকে এভাবে চালানোর প্রকল্প নিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষক ফেরেইরা।