জেরম হ্যামন। ছবি: এএফপি।
দুমুখোপনার অভিযোগটা তাঁর প্রতি তোলা যাবে না। কারণ জেরম হ্যামন এক জীবনে তিনটি মুখের মালিক।
এবং এর সব ক’টাই আসল।
আট বছরের মধ্যে দু’দু’বার সফল ভাবে মুখাবয়ব প্রতিস্থাপন করা হয়েছে জেরমের। এই নজির গ়ড়েছেন ফ্রান্সের চিকিৎসকরা। জেরম তাই চিকিৎসার দিন বদলেরও মুখ!
জন্ম থেকেই জটিল জিনগত রোগে আক্রান্ত ছিলেন জেরম। মুখাবয়ব বিকৃত হয়ে যাচ্ছিল। ২০১০ নাগাদ সিদ্ধান্ত হল, জেরমের মুখাবয়ব প্রতিস্থাপন করা হবে। মৃত শরীর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মতোই মুখ প্রতিস্থাপন। জেরমের বয়স তখন তিরিশের কোঠায়। দাতার বয়স ৬০। তা-ই সই। চিকিৎসক লরেন্ট ল্যানটাইরির নেতৃত্বে মুখ-বদল হল।
বছর কয়েক ঠিকঠাকই ছিল। তবে নিয়মিত ওষুধ খেতে হত। ২০১৫ নাগাদ সর্দি-কাশি থেকে দেখা দিল বিপত্তি। জানা গেল, যে সব ওষুধ জেরম নিয়মিত খান, সর্দিকাশির অ্যান্টিবায়োটিক তার সঙ্গে খাপ খায় না। তত ক্ষণে জেরমের মুখের কলা-কোষ নষ্ট হতে শুরু করেছে। গত নভেম্বরে জেরমের মুখে ফের চলল ছুরি-কাঁচি। নষ্ট হতে থাকা মুখটি সরিয়ে ফেলা হল।
নাক নেই, ঠোঁট নেই, কান নেই, চোখের পাতা নেই। অল্প মাথা হেলাতে পারতেন শুধু। তবে হাল ছাড়েননি। পুরনো চিকিৎসক ল্যানটাইরির পরামর্শে দ্বিতীয় প্রতিস্থাপনের দুঃসাহসী সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেললেন। এ বছর জানুয়ারি নাগাদ ফের খোঁজ মিলল দাতার। এ বার বছর বাইশের তরুণের মুখ বসবে ৪৩-এর জেরমের মুখে। তবে ঝুঁকি ছিল খুব। মৃত্যুও হতে পারত জেরমের। চিকিৎসক জানান, ‘‘জেরমের শরীরে সমস্ত রক্ত বদলে ফেলা হয়েছিল। যাতে পুরনো বিপজ্জনক অ্যান্টিবডি রয়ে না যায়।’’
নতুন মুখ নিয়ে জেরম এখন সুস্থ। চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রতিস্থাপিত মুখাবয়ব সাধারণত ১০-১৫ বছর ঠিক থাকে। জেরমের মন্তব্য, ‘‘বাইশ বছরের মুখ পেয়ে আমার বয়সটা যেন দু’দশক কমে গিয়েছে।’’