সঞ্চালকদের তোপ দেগে বিতর্কে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই বিতর্কিত টুইট নিয়ে এখন তোলপাড় হচ্ছে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে। বিতর্কের জল এতটাই গড়িয়েছে যে অতি বড় ট্রাম্প সমর্থকও এ বার ট্রাম্পের নিন্দায় সরব হয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই বিতর্কিত টুইট নিয়ে এখন তোলপাড় হচ্ছে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম। ছবি: রয়টার্স

টিভি শো-য়ের দুই সঞ্চালকের উপর বেজায় চটেছিলেন তিনি। এতটাই যে বৃহস্পতিবার সক্কাল সক্কাল তাঁদের শো চলাকালীনই দুই সঞ্চালককে বিঁধে এক জোড়া টুইট করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই বিতর্কিত টুইট নিয়ে এখন তোলপাড় হচ্ছে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে। বিতর্কের জল এতটাই গড়িয়েছে যে অতি বড় ট্রাম্প সমর্থকও এ বার ট্রাম্পের নিন্দায় সরব হয়েছেন।

Advertisement

যে দুই সঞ্চালককে নিয়ে ট্রাম্প ওই অপমানজনক মন্তব্যগুলি করেছেন, তাঁদের মধ্যে এক জন মহিলা। ওই মহিলার শারীরিক গঠন নিয়ে কটাক্ষ করে ট্রাম্প আসলে লিঙ্গ বৈষম্যকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। দেশে তো বটেই বিদেশেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বহু ব্যক্তিত্ব। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন হ্যারি পটার স্রষ্টা জে কে রোওলিং-ও।

ঘটনার সূত্রপাত কাল সকালে। আটটা নাগাদ একটি চ্যানেলে ‘মরনিং জো’ নামে একটি অনুষ্ঠান হয়। যার সঞ্চালক হলেন জো স্কারবোরো এবং মিকা ব্রেজিনস্কি। মিকা আবার জো-য়ের বাগদত্তা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার পর্বে এঁদের দু’জনের সঙ্গেই যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা ছিল ট্রাম্পের। জানুয়ারির পর থেকে ছবিটা পাল্টাতে শুরু করে। জো-দের চ্যানেলে ট্রাম্প প্রশাসনের যথেচ্ছ সমালোচনা শুরু হয়। যেটা মোটেও ভাল চোখে দেখছিলেন না প্রেসিডেন্ট। গত ডিসেম্বরে বর্ষশেষের ছুটি কাটাতে ফ্লোরিডায় ছিলেন ট্রাম্প। সেখানে তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে হাজির হয়েছিলেন জো এবং মিকা। কাল সেই প্রসঙ্গ টেনে আচমকা টুইট করে বসেন ট্রাম্প। প্রথমে লেখেন, ‘‘মরনিং জো খুবই খারাপ শো। আর তার সঞ্চালকরা আমার সম্পর্কে শুধু খারাপ কথাই বলে।’’ এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। লেখেন, ‘‘কী করে কম বুদ্ধিমান খ্যাপাটে মিকা ‘সাইকো’ জো-য়ের সঙ্গে মার-আ-লাগো তে বর্ষশেষের সময় পর পর তিন রাত আমার কাছে এসেছিল। ফেস লিফ্টের জন্য মিকার গাল থেকে রক্ত ঝরছিল। আমি না বলেছিলাম।’’ একটি সূত্র কিন্তু জানিয়েছে, সেই সময় ট্রাম্প নাকি মিকাদের সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হয়েছিলেন। আর সেই সময়কার ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর যে ছবি রয়েছে, তা দেখে একটুও বোঝা যায়নি যে তাঁর শারীরিক কিছু সমস্যা হয়েছিল। ওই টুইটের পরেই ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন ওই বিশেষ শো-টি তিনি আর দেখেন না।

Advertisement

নাম নিয়ে মিকা আর জো-কে এ ভাবে আক্রমণ করায় রুষ্ট মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বড় অংশ। যে চ্যানেলের হয়ে তাঁরা কাজ করেন, তারা একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘‘এটা খুবই দুঃখের যে প্রেসিডেন্ট নিজের কাজ ছেড়ে সংবাদ সঞ্চালকদের নোংরা আক্রমণ করছেন।’’ আব্রাহাম লিঙ্কনকে উদ্ধৃত করে জে কে রোওলিং লিখেছেন, ‘‘যদি কোনও পুরুষের চরিত্র নির্ধারণ করতে চান, তা হলে তাঁকে ক্ষমতা দিন।’’ ‘‘প্রেসিডেন্টের মুখে এমন কথা শোভা পায় না,’’ বলেও সরব হয়েছেন বহু সাংবাদিক।

তবে চারদিকে গেল গেল রব উঠলেও হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সচিব প্রেসিডেন্টের হয়ে মুখ খুলেছেন। সারা এইচ স্যান্ডার্স বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট একতরফা ভাবে আক্রমণ করা হবে আর উনি মুখ বুজে বসে থাকবেন, এটা ভাবার কোনও কারণ নেই। সবারই মনে রাখা উচিত আগুন নিয়ে লড়াই করলে তার জবাব আমাদের প্রেসিডেন্ট আগুনেই দিতে জানেন।’’ একই ভাবে স্বামীর পাশে দাঁড়িয়েছেন মেলানিয়া ট্রাম্পও।

ট্রাম্পের অপমানের জবাবে মুখ খুলেছেন জো আর মিকা। মিকা বলেছেন, ‘‘আমি খুবই উদ্বিগ্ন যে, আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে নিয়ে আসল সত্যিটা আবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে।’’ জো বলেছেন, ‘‘আমরা ঠিক আছি। দেশ নয়।’’ এই সবের মধ্যে আজ সকালেই আবার টুইটারে মুখ খুলেছেন ট্রাম্প। জো-দের শো ভুল খবর (ফেক নিউজ) প্রচার করে বলে তোপ দেগেছেন তিনি। টুইট যুদ্ধ কবে থামবে, দেখার সেটাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement