সুনামি আছড়ে পড়ল ইন্দেনেশিয়ায়। ছবি টুইটার থেকে সংগৃহীত।
তীব্র ভূকম্পের পর এ বার সুনামির ধাক্কা লাগল ইন্দোনেশিয়ার পালু শহরে। ইন্দোনেশিয়ার জিওফিজিক্স এজেন্সির তরফে এই খবর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ভয়াবহ ভূকম্পের পরেই সুনামি আছড়ে পড়েছে সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহরে। ভয়ে মানুষকে এলাকা ছেড়ে পালাতে দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার প্রথমে ইন্দোনেশিয়া কেঁপে ওঠে তীব্র ভূকম্পে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৫। তাতে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত আরও ১০ জন। তবে এ দিন ভূকম্পের উৎসস্থল (এপিসেন্টার) ছিল যেখানে, তার থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে পালু শহরে আছড়ে পড়েছে সুনামি। পালু শহরে বসবাস করেন সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি মানুষ।
শুক্রবার তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ইন্দোনেশিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। কেন্দ্রস্থল সুলাওয়েসি দ্বীপ। কিছুক্ষণের মধ্যেই সুনামি সতর্কতা জারি করে উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হয় বাসিন্দাদের। ‘ইন্দোনেশিয়ান এজেন্সি ফর মেটিওররোলজি, ক্লাইমেটোলজি অ্যান্ড জিওফিজিক্স’-এর তরফে জানানো হয়েছিল, সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতা হবে কম করে ৩ ফুট।
দেখুন সুনামির ভিডিয়ো
মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে প্রথমে জানিয়েছিল, কম্পনের মাত্রা ৭.৭। তবে পরে জানানো হয়, রিখটার স্কেলে ৭.৫ তীব্রতার কম্পন ধরা পড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি জাপানেও জারি করা হয়েছে সুনামি সতর্কতা। পরে ‘ইন্দোনেশিয়ান এজেন্সি ফর মেটিওররোলজি, ক্লাইমেটোলজি অ্যান্ড জিওফিজিক্স’-এর তরফে জানানো হয়, ওই ভূকম্পের পরেই এ দিন রিখটার স্কেলে ৬.১ মাত্রার আরও একটি ভূকম্প হয় একই এলাকায়।
দেখুন সুনামির ভিডিয়ো
ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলির মধ্যে প্রথম সারিতেই রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। মাঝেমধ্যেই কেঁপে উঠে এই দ্বীপ রাষ্ট্র। ২০০৪ সালে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প এবং তার জেরে সুনামি আছড়ে পড়ে অন্তত ১৩টি দেশে। সব দেশ মিলিয়ে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। শুধু ইন্দোনেশিয়াতেই মৃতের সংখ্যা ছিল এক লক্ষ ২০ হাজার।
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানিয়েছে, প্রবল জলস্রোতে পালু ও ডঙ্গালায় বহু ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ সব চেয়ে বেশি ডঙ্গালায়। দু’টি শহরে প্রায় ৬ লক্ষ মানুষের বাস। সুনামির পর থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বহু পরিবারের। বিদ্যুৎ ও টেলিফোন লাইন ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। দফতরের মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা লোকজনকে বাড়ির ভিতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছি। উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, আগামিকাল সুনামি কবলিত এলাকাগুলি থেকে নৌকা ও হেলিকপ্টারে উদ্ধার কাজ শুরু হবে।
স্থানীয় টেলিভিশনে দেখা গিয়েছে, পালুতে আছড়ে পড়ছে দৈত্যাকার ঢেউ। খড়কুটোর মতো ভেসে যাচ্ছে গাছপালা, গাড়ি। প্রাণভয়ে চিৎকার করছেন মানুষ। ওই মুখপাত্রের কথায়, ‘‘এখনই ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বোঝা যাচ্ছে না। তবে অভিজ্ঞতা বলছে হচ্ছে, পালু ও ডঙ্গালায় বড় মাপের ক্ষতি হয়েছে।’