হামলা: সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এক আততায়ীর মৃতদেহ। রয়টার্স
শুক্রবার সকাল। প্রার্থনার জন্য তত ক্ষণে ভিড় জমতে শুরু করেছে শহরের পবিত্র ধর্মস্থানে। আচমকাই মূল ফটকের বাইরে পাহারায় থাকা পুলিশকর্মীদের উপর চড়াও হলো তিন জঙ্গি। চলল গুলির লড়াই। রক্তাক্ত হলো ধর্মস্থান।
জেরুসালেমের ওল্ড সিটিতে এই হামলায় নিহত হয়েছেন দুই পুলিশকর্মী। পুলিশের পাল্টা গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে তিন হামলাকারীও। ওই তিন বন্দুকবাজকে শনাক্ত করে ইজরায়েল পুলিশের মুখপাত্র মিকি রোজেনফেল্ড জানিয়েছেন, ওই তিন বন্দুকবাজই ইজরায়েলের আরব অধ্যুষিত শহর উম আল-ফাহামের বাসিন্দা। নাম মুহম্মদ আহমেদ মুহম্মদ জবরিন, মুহম্মদ আবদেল লতিফ জবরিন এবং মুহম্মদ আহমেদ মফদল জবরিন। দু’জনের বয়স ১৯, তৃতীয় জনের ২৯। নিহত পুলিশকর্মীদের এক জন— ক্যামিল শ্যাননের বয়স ২২। আর এক পুলিশকর্মী, ৩০ বছর বয়সি হেইল সাথাউয়ি, মাত্র তিন সপ্তাহ আগে বাবা হয়েছেন।
ওল্ড সিটির আল-আকসা ধর্মস্থানে প্রার্থনা করতে আসেন ইহুদি ও মুসলিমরা। ইহুদিদের কাছে আল-আকসা ‘টেম্পল মাউন্ট’ এবং মুসলিমদের কাছে এই ধর্মস্থান ‘নোবেল স্যাঞ্চুয়ারি’ নামে পরিচিত। সপ্তম শতকে তৈরি প্রাচীন মার্বেল-পাথরে মোড়া এই ধর্মস্থান মুসলিম ও ইহুদি, দুই সম্প্রদায়ের কাছেই অত্যন্ত পবিত্র। এই এলাকায় প্যালেস্তাইন ও ইজরায়েল পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই থাকে। তবে গুলির লড়াইয়ের ঘটনা খুব একটা দেখা যায় না।
নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা এই ধর্মস্থানেই আজ হামলা চালিয়েছে তিন বন্দুকবাজ। তাদের কাছে ছিল স্বয়ংক্রিয় বন্দুক ও ছুরি। মূল ফটকের বাইরে পাহারায় থাকা পুলিশকর্মীদের লক্ষ করে গুলি চালাতে শুরু করে তারা। লুটিয়ে পড়েন তাঁরা। এর পরেই ওই তিন আততায়ী মসজিদ চত্বরে ঢুকে পড়ে। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ গুলির লড়াই চলে তাদের। সেখানেই খতম হয় তিন হামলাকারী। পরে ওই মসজিদ চত্বর থেকেই তাদের দেহ উদ্ধার হয়েছে। আহত পুলিশকর্মীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে দু’জনের মৃত্যু হয়। তদন্তের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় শুক্রবারের প্রার্থনা। ধর্মস্থানের ভিতরে অস্ত্রশস্ত্র লুকিয়ে রাখা আছে কি না, দেখছে পুলিশ।
হামলার পরেই ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ধর্মস্থানে এ ধরনের হামলার কড়া নিন্দা করেছেন আব্বাস। পাশাপাশি, সব পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার ডাক দিয়েছেন নেতানিয়াহুও।