শেখ লতিফার এই ছবি-ই সামনে আনা হয়েছে। ছবি: এএফপি।
প্রাসাদেই রয়েছেন রাজকুমারী শেখ লতিফা। আর বহাল তবিয়তেই রয়েছেন। জানিয়ে দিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর রাজপরিবার। বেশ কিছু দিন ধরে তাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। জোর করে রাজকুমারীকে আটকে রাখা হয়েছে, তাঁর ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছিল।
সোমবার বিবৃতি জারি করে তা উড়িয়ে দিল সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক। প্রমাণ স্বরূপ একাধিক ছবিও প্রকাশ করে তারা। তাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন হাই কমিশনার এবং আয়ারল্যান্ডের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসনের সঙ্গে হালকা মেজাজে দেখা গিয়েছে রাজকুমারী লতিফাকে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘দুবাই সফরে এসেছিলেন মেরি রবিনসন। ১৫ ডিসেম্বর প্রাসাদে আমন্ত্রণ জানানো হয় তাঁকে। রাজকুমারীর সঙ্গে অনেকটা সময় কাটান তিনি। যার পর রাজকুমারী নিরাপদে রয়েছেন, প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ও যত্ন পাচ্ছেন বলে নিশ্চিত হন। যাবতীয় অভিযোগের জবাব দিতেই দু’জনের সাক্ষাতের ছবি প্রকাশ করা হল।’’
ইউটিউবে শেখ লতিফার এই ভিডিয়ো নিয়েই যাবতীয় অভিযোগ।
আরও পড়ুন: রোদ্দুর হয়ে গেলেন অমলকান্তির কবি নীরেন্দ্রনাথ (১৯২৪-২০১৮)
তবে রাজপ্রাসাদ এবং সে দেশের সরকারের তরফে বিবৃতি জারি করা হলেও, এ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ বা মেরি রবিনসনের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
দুবাইয়ের শাসক ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর প্রধানমন্ত্রী শেখ মহম্মদ বিন রশিদ আল-মাখতুনের কন্যা রাজকুমারী শেখ লতিফা বিন্ত মহম্মদ আল-মাখতুন। এ বছর মার্চ মাসে খবরের শিরোনামে উঠে আসেন তিনি। হার্ভি জিবার্ত নামের এক ফরাসি গুপ্তচরের সাহায্যে জলপথে দুবাই ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ভারতীয় উপকূল থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় লোক পাঠিয়ে তাঁকে পাকড়াও করে ফেলে রাজপরিবার। জোর কের হেলিকপ্টারে তুলে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: এক এক করে সিনিয়ররা চলে যাচ্ছেন…
তার কয়েক দিন পর আচমকাই ইউটিউবে একটি ভিডিয়ো সামনে আসে। যাতে রাজপরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলতে দেখা যায় রাজকুমারীকে। ৩৯ মিনিটের ওই ভিডিয়োয় তিনি জানান, কড়া নিয়ম-কানুন রাজপ্রাসাদে। ব্যক্তি স্বাধীনতা বলে কিছু নেই। টানা তিন বছর তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। চালানো হয়েছিল নিদারুণ অত্যাচার। ২০০২ সালে ১৬ বছর বয়সে একবার পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আর একবার চেষ্টা করে দেখতে চান। বেঁচে থাকা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করতে দেখা যায় তাঁকে। ভিডিয়োটি যখন সকলের হাতে পৌঁছবে, তখন তিনি হয়ত বেঁচে থাকবেন না বলেও সংশয় প্রকাশ করেন। ভিডিয়োটি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় গোটা দুনিয়ায়। রাজপরিবারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। তবে বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে রাজপরিবার। ডিসেম্বরের শুরুতে সেই মর্মে একটি বিবৃতিও জারি করে তারা। তার পরই রাজকুমারীর ছবি সামনে আনা হল।