যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তেহরান। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকা যে ইরানে হামলা চালাবে, তা জানত ব্রিটেন! তবে ওই হামলার সঙ্গে ব্রিটেন জড়িত নয়। রবিবার সকালে এমনটাই জানিয়েছে তারা। ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ড্স জানান, ইরানে আকাশপথে হামলা চালানোর বিষয়ে আমেরিকা যে পরিকল্পনা চালাচ্ছে, তা ব্রিটিশ সরকার জানত। তবে এর সঙ্গে ব্রিটেন যুক্ত নয়। সংবাদমাধ্যম ‘স্কাই নিউজ়’কে তিনি আরও জানান, ভারত মহাসাগরে দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপে ব্রিটেনের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের কোনও অনুরোধও আমেরিকা করেনি।
রবিবার ভোরে ইরানের বিরুদ্ধে হামলা চালায় আমেরিকা। ফোরডো, নাতান্জ় এবং ইসফাহান— ইরানের এই তিনটি জায়গায় পরমাণুকেন্দ্রে অভিযান চালায় মার্কিন সামরিক বাহিনী। ওই হামলার পরে পশ্চিম এশিয়ার সংঘর্ষের পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সে দিকে নজর রয়েছে গোটা বিশ্বের। ব্রিটেনের ওই সংবাদমাধ্যমকে রেনল্ড্স জানান, ব্রিটেন এই হামলায় জড়িত না থাকলেও সম্ভাব্য সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে। পশ্চিম এশিয়া থেকে ব্রিটিশ নাগরিকদের কী ভাবে বার করে আনা যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সেখানে ব্রিটেনের বিভিন্ন কূটনৈতিক ভবন, সামরিক ঘাঁটি এবং সরকারি কর্মীদের কী ভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়, তা-ও বিবেচনা করা হচ্ছে।
ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী আরও জানান, ঠিক কখন আমরা (হামলার) বিষয়ে জানতে পারি, সেই নির্দিষ্ট সময় আমি বলতে পারব না। তবে আমাদের জানানো হয়েছিল। এই ধরনের পদক্ষেপের সময় কোনও গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু রাষ্ট্রের থেকে যেমনটা আশা করা যায়, তেমনটাই হয়েছিল।” ইরানের বিরুদ্ধে আক্রমণে ব্রিটেন যুক্ত ছিল না বলে জানালেও পরমাণু অস্ত্র প্রসঙ্গে আবারও স্টার্মার সরকারের অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। রেনল্ড্স বলেন, “ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে ঠেকানোর উদ্যোগকে আমরা সমর্থন করি। আমরা কূটনৈতিক ভাবে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। অন্য ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলিও তা-ই বলছিল। কিন্তু ইরান তাতে রাজি হয়নি।”
স্থানীয় সময় শনিবার রাতে ইরানে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি আমেরিকার। ট্রাম্প নিজে ট্রুথ সোশ্যালে দাবি করেছেন, ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছেন তাঁরা। শুধু তা-ই নয়, দুর্ভেদ্য ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রই ছিল তাঁদের মূল নিশানা। আর সেই পরমাণুকেন্দ্রে জোরালো হামলা চালানো হয়েছে। আর এটা যে তাঁদের দ্বারাই সম্ভব, সেটাও গর্বের সঙ্গে দাবি করেছেন ট্রাম্প। এই হামলা চালাতে কী কী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে তা-ও উল্লেখ করেছেন। আর হামলার সেই মুহূর্তকে আমেরিকা এবং ইজ়রায়েলের ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলেও দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।