ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে বার বার সরব হয়েছে ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই একই সুরে এ বার ব্রিটেনও বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা করে উদ্বেগ প্রকাশ করল। ঘটনাচক্রে, কয়েক দিন আগেই ভারত সফরে এসেছিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। মুম্বইয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন তিনি।
ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ ‘হাউস অফ কমনস’-এ বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের বিবৃতি দাবি করেছিলেন বিরোধী দল কনজ়ারভেটিভ পার্টির এমপি বব ব্ল্যাকম্যান। বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা বিতাড়িত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। তার জবাবেই শাসকদল লেবার পার্টির এমপি তথা নিম্ন কক্ষের নেতা স্যর অ্যালান ক্যাম্পবেল বলেন, ‘‘ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে ভাবে হিংসা এবং অত্যাচারের ঘটনা ঘটছে, তা উদ্বেগজনক। তীব্র নিন্দা করছি। বাংলাদেশের মানবাধিক পরিস্থিতির দিকে আমরা নজর রেখেছি। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনেই যাতে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতার হস্তান্তর করে, তা-ও নজরে রাখা হচ্ছে।’’
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছিল, সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের বেশির ভাগ ঘটনাই রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে। পরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছিল, গত বছরের ৫ অগস্ট থেকে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মোট ২৩৭৪টি অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে ১২৫৪টি অভিযোগ সে দেশের পুলিশ যাচাই করে দেখেছে। ওই যাচাই করা অভিযোগগুলির মধ্যে ৯৮ শতাংশই রাজনৈতিক কারণে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পাল্টা ভারতের বক্তব্য, শুধুমাত্র ‘রাজনৈতিক কারণে’ বা ‘সংবাদমাধ্যমের অতিশয়োক্তি’ বলে ঘটনাগুলিকে এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। ভারত চায় সংখ্যালঘুদের অত্যাচারের অভিযোগের ক্ষেত্রে কোনও ভেদাভেদ না-করে প্রতিটি ঘটনায় বিশদ তদন্ত করুক বাংলাদেশের প্রশাসন। প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি মাসে সংখ্যালঘু নিপীড়ণে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। যদিও বাস্তবে তা কত দূর কার্যকর হয়েছে, তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেছে আমেরিকাও। ওয়াশিংটনও জানিয়েছে, তারা ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপের দিকে নজর রাখছে।