Russia

Ukraine: বেধড়ক মার, মুখে গুলির পর জীবন্ত পুঁতে দিয়েছিল! মৃত্যু ছুঁয়ে ফিরে বললেন ইউক্রেনীয়

মাইকোলা বলেন, “ওরা গুলি ছুড়েছিল ঠিকই। কিন্তু সেই গুলি সৌভাগ্যবশত মাথা না ফুঁড়ে, আমার গাল ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল।”

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কিভ শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২২ ১৭:৪১
Share:

মাইকোলার দুই ভাই। রুশ সেনারা গুলি করে খুন করেছে তাঁদের।

গেট ভেঙে বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল রুশ সেনারা। ঘরে ঢুকে একের পর এক জিনিস টেনে বাইরে আছড়ে আছড়ে ফেলছিল আর অশ্লীল ভাষায় গালাগালি দিচ্ছিল। তার পরই তিন ভাইকে বাড়ির বাইরে টেনেহিঁচড়ে এনে বন্দুকে নলের মুখে হাঁটু গেড়ে বসানো হল। তখনও তল্লাশি চলছিল ঘরের ভিতরে। হঠাৎই এক সেনা চিৎকার করে উঠলেন। তার পরই হাতে একটি সেনার পদক নিয়ে বেরিয়ে এলেন।

তার পরই শুরু হল তিন ভাইকে বেধড়ক মার। বলতে বলতে শিউরে উঠছিলেন ইউক্রেনের চেরনিহিভের ডোভজিকে গ্রামের বাসিন্দা মাইকোলা। দুই ভাই ইভেয়েন, দিমিত্রো এবং বোন ইরিনাকে নিয়ে থাকতেন মাইকোলা। ১৮ মার্চ সব কিছু ওলটপালট হয়ে যায় মাইকোলার জীবনে। ওই দিন ডোভজিক দখল করে নিয়েছিল রুশ সেনারা। তার আগেই রুশ সেনার একটি দলের উপর ইউক্রেনীয় সেনারা বোমা হামলা চালায় ওই গ্রামেই। তার পরই গ্রামবাসীদের ঘরে ঘরে ঢুকে লুটপাট, তাণ্ডব এমনকি অত্যাচার করে খুন করার অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

মাইকোলার বাড়িতেও ঢুকেছিল রুশ সেনারা। তাঁদের হাত-পা বেঁধে নিজেদের সঙ্গে নিয়ে যায় রুশ সেনারা। তিন দিন ধরে লোহার রড দিয়ে তিন ভাইকে বেধড়ক মারধর করে তারা। যত ক্ষণ না জ্ঞান হারিয়েছিল, তত ক্ষণ পর্যন্ত পিটিয়ে যাওয়া হয়েছিল তিন জনকেই। তার পরেও রুশ সেনাদের অত্যাচার থামেনি। সেনা পরিবারের হওয়ায় মাইকোলাদের উপর অত্যাচারের মাত্রা আরও বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল রুশ সেনারা। তিন দিন ধরে মারধরের পর চতুর্থ দিন তিন ভাইকে একটি গাড়ির পিছনে বেঁধে হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল একটি ফাঁকা জমিতে। সেখানে আগে থেকেই বড় গর্ত খুঁড়ে রাখা ছিল।

এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে মাইকোলা বলেন, “আমাদের সকলের চোখই বাঁধা ছিল। ফলে কী হতে চলেছে কেউই বুঝতে পারছিলাম না। কিছু সময় পরেই বন্দুকের গুলির আওয়াজ পেলাম। আমার পাশেই মেজ ভাই দিমিত্রি ছিল। ধপ করে মাটিতে পড়ে যাওয়ার আওয়াজ পেলাম। তার পরই আবার গুলি। আমার বাঁ পাশে ছিল ছোট ভাই ইভেয়েন। ও মাটিতে পড়ে গেল। তত ক্ষণে আমার আর বোঝার কিছু বাকি ছিল না।”

Advertisement

মাইকোলা আরও বলেন, “দুই ভাইয়ের পর আমার পালা ছিল। অপেক্ষা করছিলাম কখন গুলি এসে মাথাটা ফুঁড়ে দেয়। গুলি ওরা ছুড়েছিল ঠিকই, কিন্তু সেই গুলি সৌভাগ্যবশত মাথা না ফুঁড়ে, আমার গাল ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। মাটিতে পড়ে গিয়েছিলাম। ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। সেনারা ভেবেছিল মরে গিয়েছি। তার পর লাথি মেরে আমাদের তিন ভাইকে ওই বড় গর্তের মধ্যে ফেলে দিল। তার পর মাটিচাপা দিয়েছিল। তার পরই ওরা চলে যায়। সবার নীচে ছিল ইভেয়েনের দেহ। তার উপর আমাকে ফেলা হয়। আমার উপর ছিল দিমিত্রির দেহ।”

মাইকোলা জানিয়েছেন, ক্রমে দমবন্ধ হয়ে আসছিল। কোনও রকমে দিমিত্রির দেহটাকে আমার উপর থেকে সরিয়েছিলাম। তাঁর কথায়, “জানি না, কোথা থেকে বাঁচার এত জোর চলে এসেছিল। নিজেকে ঠেলে তুলেছিলাম গর্ত থেকে। তার পর টলতে টলতে মাঠ ধরে এক মহিলার বাড়িতে পৌঁছেছিলাম। রাতভর ওই বাড়িতে থেকে ভোরে নিজের বাড়িতে পৌঁছেছিলাম। তখন বাড়িতে ইরিনা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন