রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে আগেই একঘরে হয়ে গিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফের নতুন করে চাপের মুখে আমেরিকা।
গত ৯ ডিসেম্বর জেরুসালেম-প্রসঙ্গে জরুরি বৈঠক ডেকেছিল নিরাপত্তা পরিষদ। ট্রাম্পের জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী ঘোষণা এবং তেল আভিভ থেকে মার্কিন দূতাবাস সেখানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে সে দিন সমর্থন জানায়নি কোনও সদস্য দেশই। শনিবার ফের খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ। মিশরের তরফে পেশ করা এক পাতার খসড়া প্রস্তাবে অনুগ্রহ করা হয়েছে— ‘জেরুসালেম সম্পর্কিত কোনও সিদ্ধান্তকেই আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হবে না এবং অবশ্যই বাতিল বলে গণ্য করা হবে।’
শনিবার ১৫ সদস্যের পরিষদের প্রত্যেক দেশকে দেওয়া হয়েছে ওই প্রস্তাব। খসড়াটি দেখানো হয়েছে সংবাদমাধ্যমকেও। তবে ওই প্রস্তাবের কোথাও আমেরিকা বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করা হয়নি। কূটনীতিকরা জানাচ্ছেন, এই পদক্ষেপে তাঁদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু ওয়াশিংটন ভেটো দিতে পারে। এ সপ্তাহের গোড়ায় ভোট হতে পারে। প্রস্তাব পাশ হতে হলে তার সমর্থনে অন্তত ৯টি ভোট চাই। যে হেতু আমেরিকার ভেটো দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, তাই আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন, রাশিয়া, চিনের ভেটো গৃহীত হবে না।
গত ৬ ডিসেম্বর ট্রাম্প ঘোষণা করেন, জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিচ্ছে আমেরিকা। ক্ষোভে জ্বলতে থাকে প্যালেস্তাইন। উত্তেজনা ছড়ায় আরব দেশগুলোতেও। এর পরেই তারা একসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হয়েছিল। এই প্রস্তাব পাশ হলে, জেরুসালেম প্রসঙ্গে নতুন করে কোণঠাসা হয়ে পড়বে ওয়াশিংটন। রাষ্ট্রপুঞ্জের মার্কিন প্রতিনিধিরা অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। রাষ্ট্রপুঞ্জের মার্কিন দূত নিকি হ্যালি এ দিনও প্রেসিডেন্টের সমর্থনে বলে গিয়েছেন, ‘‘যেটা ঠিক, সেটাই হবে।’’ ইজরায়েলের প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘‘জেরুসালেম যে ইজরায়েলেরই রাজধানী, কোনও ভোট বা বিতর্কে সেই সত্যিটা বদলে যাবে না।’’
প্যালেস্তাইন চায় পূর্ব জেরুসালেমই হোক তাদের রাজধানী। আর জেরুসালেম ভাগ হয়ে যাক, ইজরায়েল সেটা চায় না। অভিযোগ, ১৯৮০ সালে শহরটি জবরদখল করেছিল ইজরায়েল। নিজেদের রাজধানী ঘোষণা করেছিল। দুনিয়া অবশ্য কোনও দিনই ইজরায়েলের দাবিকে স্বীকৃতি দেয়নি। মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের পবিত্রভূমিকে ঘিরে বিতর্ক রয়েই গিয়েছে।