প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ছাত্রের থেকে ছাত্রীদের অনুপাত বেশ খানিকটাই কম। কম্পিউটার সায়েন্স আর অঙ্ক বিভাগে এমন ফলাফলই হয়ে আসছে গত কয়েক বছর ধরে। ছাত্রীদের তুলে ধরতে তাই অভিনব পদ্ধতি বার করেছিলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত বছর ওই দুই বিভাগের লিখিত পরীক্ষার সময় ছাত্রীদের পনেরো মিনিট করে বেশি সময় দেওয়া হয়েছে। খুব সম্প্রতি একটি ব্রিটিশ দৈনিকে এ খবর ছাপা হয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমনটা প্রথম। ছাত্রীদের ক্ষেত্রে আলাদা করে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি অবশ্য। একই প্রশ্নপত্রে উত্তর লেখার জন্য একটু বেশি সময় পেয়েছেন তাঁরা।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। পরীক্ষার সময় ছাত্রীদের বেশি সময় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আসলে লিঙ্গবৈষম্যকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টি অস্বীকার করেননি। উল্টে তাঁরা জানিয়েছেন, লিঙ্গবৈষম্য নয়, মেয়েদের লেখাপড়ার মানোন্নয়নের জন্যই এই সিদ্ধান্ত। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরই একাংশ মনে করছিলেন, পরীক্ষার ঘড়ি মাপা সময়ের চাপ ঠিক নিতে পারছিলেন না ছাত্রীরা। সময়ের মধ্যে লেখা কী করে শেষ করব, এই ভাবনায় অনেক সময় জানা জিনিসও ভুল করে ফেলছিলেন তাঁরা। আর এই সময়ের ভীতিটা ছাত্রদের থেকে ছাত্রীদের ক্ষেত্রে অনেকটাই বেশি। তা ছাড়া, গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছিল, এই দুই বিষয়ে প্রথম শ্রেণির পাওয়া ছাত্রীদের সংখ্যা ছাত্রদের থেকে প্রায় অর্ধেক। তাই গত বছর থেকে ছাত্রীদের পনেরো মিনিট করে বেশি সময় লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে ওই ব্রিটিশ দৈনিকই জানিয়েছে, ছাত্রীদের এই আলাদা ১৫ মিনিট করে দেওয়ার পরেও দেখা গিয়েছে ৪৭ শতাংশ ছাত্র প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। ছাত্রীদের ক্ষেত্রে সেই হারটা ৩৯ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তুলনায় কিছুটা হলেও ভাল ফল করেছেন ছাত্রীরা।
নারী-পুরুষের সমানাধিকারে বিশ্বাসী অক্সফোর্ডেরই বেশ কিছু ছাত্রী অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত। কম্পিউটার সায়েন্সের স্নাতক স্তরের ছাত্রীদের প্রতিনিধি আন্তোনিয়া সিউ যেমন বললেন, ‘‘কোনও একটি বিশেষ লিঙ্গের পক্ষ নেওয়াকে আমি মোটেও সমর্থন করি না। কিন্তু যখন কোনও বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে, তখন সেই বিষয়ে মুখ খোলাটাও খুব জরুরি।’’