গভীর রাতে চলছে গণনা। ছবি: সংগৃহীত।
ভোটপর্ব মোটের উপর শান্তিতে মিটেছিল। কিন্তু গোল বাধল বিকেলের পর গণনা শুরু হতেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদের নির্বাচনে পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলল প্রাক্তন শাসকদল বিএনপির ছাত্রশাখা ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল’, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কট্টরপন্থী ধর্মীয় রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামি সমর্থিত ‘ইসলামি ছাত্রশিবির’। সংঘাত বাধল দু’পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। বাংলাদেশের কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট জানাচ্ছে, ‘ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ কেন্দ্রের সামনে দু’পক্ষের সমর্থকদের স্লোগান-পাল্টা স্লোগান এমনকি হাতাহাতিও হয়েছে। উত্তেজনা রয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ক্লাব কেন্দ্রের সামনেও।
তারই মধ্যে গভীর রাতে চলছে গণনা। প্রধান রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীমউদ্দিন জানিয়েছেন, রাতের মধ্যেই ফল প্রকাশের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)-র মোট ২৮টি পদের জন্য প্রার্থী ছিলেন ৪৭১ জন। অন্য দিকে, ১৮টি হল সংসদে নির্বাচন হয়েছে ১৩টি করে পদে। হল সংসদের ২৩৪টি পদের জন্য প্রার্থী হয়েছিলেন ১০৩৫ জন। অর্থাৎ প্রত্যেক ভোটারকে ৪১টি (২৮+১৩) করে ভোট দিতে হয়েছে। আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে ডাকসুর ছাত্র প্রতিনিধিদের দুই শীর্ষপদ সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নির্বাচন। বস্তুত, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের জমানায় মঙ্গলবারই প্রথম কোনও নির্বাচন হল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদের মোট ৪১টি আসনের নির্বাচনে মূল লড়াই ছিল ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল’, ‘ইসলামি ছাত্রশিবির’ এবং গত বছরের জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’-এর মধ্যে।
এ ছাড়া ভোটের ময়দানে ছিলেন বামপন্থী সংগঠন ‘বাংলাদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ এবং গত বছর শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের আর এক শক্তি গণ অধিকার ফোরাম সমর্থিত ছাত্রগোষ্ঠী ‘বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ’-এর প্রার্থীরাও। তবে গণবিক্ষোভের জেরে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র লীগকে ইউনূস সরকার নিষিদ্ধ করায় তারা ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি পায়নি। কেন্দ্রীয় সংসদ এবং হল সংসদের জন্য দু’টি আলাদা ব্যালট বক্স ছিল প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বার ভোট হয়েছে ‘অপটিক্যাল মার্ক রেকগনিশন’ (ওএমআর) শিটে। ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল’-এর নেতা তথা সহ-সভাপতি পদের প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান মঙ্গলবার রাতে কারচুপির অভিযোগ তুলে বলেন, ‘‘এই নির্বাচন হাসিনার ফ্যাসিস্ট নির্বাচনকে ছাপিয়ে গিয়েছে।’’