—প্রতীকী ছবি।
গত বছরে বিশ্ব জুড়ে প্রাণঘাতী তাপপ্রবাহের মুখে পড়েছিলেন ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ। বৃহস্পতিবার বিজ্ঞানীরা এ কথা জানিয়েছেন। সঙ্গে তাঁরা ফের সতর্ক করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বিশ্বস্বাস্থ্যে নজিরবিহীন প্রভাব পড়ছে।
জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিশ্বজনীন একটি সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, ৬৫-র উপরে যাঁদের বয়স এবং যাঁরা বড় শহরে থাকেন, আর যাঁদের হৃদ্যন্ত্র বা ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে, মারাত্মক তাপপ্রবাহে তাঁদের মৃত্যু অথবা পঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা সব চেয়ে বেশি। রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু সংক্রান্ত দফতরও এর মধ্যেই জানিয়েছে, ২০১৮-সহ গত চার বছর সব চেয়ে উষ্ণ ছিল। জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে ১৫,৩০০ কোটি ঘণ্টা কাজের সময় নষ্ট হয়েছে শুধু তাপপ্রবাহের মুখে পড়ার জন্য। নষ্ট হয়েছে ভারতের মোট পরিশ্রমের (‘অল লেবার টাইম’) সাত শতাংশও। তাপপ্রবাহ থেকে মানুষকে বাঁচাতে যে মূল্য দিতে হচ্ছে, তা দিনে দিনে আরও বিপুল হবে। কারণ পৃথিবী আরও উষ্ণ হবে।
ওই সমীক্ষা যাঁরা করেছেন, তাঁদের মতে, উষ্ণায়নের ফল বিশেষ করে ভয়ঙ্কর হবে ইউরোপ এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে। ‘দ্য ল্যানসেট কাউন্টডাউন অন হেল্থ অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’-এর অধিকর্তা নিক ওয়াটস বলছেন, ‘‘আমরা বহু দিন ধরেই জানি, পরিবেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ২১০০ সাল থেকে বোঝা যাবে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যখন আমরা জনস্বাস্থ্যে দেখতে পাব, সেটাই সব চেয়ে ভাবাবে। এর প্রভাব আর শুধু মেরুভালুক বা বৃষ্টি অরণ্য দিয়ে বোঝা যাবে না। এ বার ব্রিটেন ও ইউরোপের অন্য অংশের বিভিন্ন সম্প্রদায়, শিশু, পরিবারের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব মালুম হবে।’’
সমীক্ষার জন্য এই দলটিতে ছিলেন বিশ্বব্যাপী ২৭টি প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা জলবায়ু এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করেছেন। ওয়াটস-এর দল দেখেছে, ১৯৮০-র মাঝামাঝি সময় থেকে বিশ্ব জুড়ে তাপমাত্রা বেড়েছে ০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেশ কিছু কারণের সংমিশ্রণে এটা ঘটেছে বলে দাবি তাদের। কৃষি ক্ষেত্রে মারাত্মক তাপমাত্রার জন্য ৮০ শতাংশ কাজের সময় নষ্ট হয়েছে। ঘণ্টার হিসেবে ভারতে যার প্রভাব সব চেয়ে বেশি।