(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং শি জিনপিং (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।
চিনের সঙ্গে সংঘাতের আবহে তাইওয়ানকে ১১১০ কোটি ডলারের (প্রায় ১ লক্ষ ২৬৩ কোটি টাকা) অস্ত্র সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব মার্কিন কংগ্রেসে অনুমোদন পেতে চলেছে। আমেরিকা-তাইওয়ান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসে এটিই বৃহত্তম সামরিক সহযোগিতা।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বুধবার আমেরিকা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র কেনার কথা জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা সমঝোতায় আট ধরনের সমরাস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে— এম-১৪২ ‘হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম’ বা হিমার্স, হাউইটজার কামান, ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ‘জ্যাভলিন’, আত্মঘাতী ড্রোন এবং বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামের যন্ত্রাংশ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আত্মরক্ষার ক্ষমতা বজায় রাখতে এবং দ্রুত প্রত্যাঘাতের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে তাইওয়ানকে সহায়তা করছে আমেরিকা। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য এটি অপরিহার্য।’’
ট্রাম্প সরকারের এই পদক্ষেপের খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেজিং। বৃহস্পতিবার শি জিনপিং সরকারের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, ‘‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করার জন্য আমেরিকা বলপ্রয়োগ করলে হিতে বিপরীত হবে। তাইওয়ানকে ব্যবহার করে চিনকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল একেবারেই সফল হবে না।’’ প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের অগস্টে চিনের আপত্তি খারিজ করে আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজ়েনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরেই নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়। সে সময় ধারাবাহিক ভাবে তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করতে শুরু করেছিল চিনা যুদ্ধবিমান। চিন-তাইওয়ান সঙ্কটের আবহে সে সময় আমেরিকার সপ্তম নৌবহরের অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালীতে ঢুকেছিল।
সে সময় পূর্ব চিন সাগর থেকে কয়েকটি জাপানি যুদ্ধজাহাজও তাইওয়ান প্রণালীতে প্রবেশ করেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রথম বার তাইওয়ান প্রণালীতে জাপানি যুদ্ধজাহাজের ‘অনুপ্রবেশ’ ঘিরে দু’দেশের সংঘাতের শুরু হয়। সম্প্রতি, সরাসরি টোকিয়োর বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসনের হুমকিও দিয়েছে বেজিং। কয়েক মাস আগেই আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ অভিযোগ করেছিলেন, এশিয়ায় ‘ক্ষমতার ভারসাম্য’কে নষ্ট করাই চিনের লক্ষ্য। সিঙ্গাপুরে আয়োজিত বার্ষিক ‘শাংগ্রি-লা বৈঠকে’ তিনি বলেন, ‘‘ক্রমাগত হুমকিও দিয়ে চলেছে তারা (চিন)৷ এই হুমকিকে হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয়। পরবর্তীতে তা আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে৷’’ এ জন্য ওই অঞ্চলে আমেরিকার মিত্রদেশগুলিকে নিরাপত্তা খাতে আরও বেশি ব্যয় করার পরামর্শ দিয়েছিলেন পিট। এমনকি, চিন তাইওয়ানের দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।